প্রতীকী ছবি
এলাকার অনেকেই দিনমজুর। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে সমস্ত কাজ বন্ধ। ঘরে খাবার নেই। নিয়মিত রেশন পেলেও তা দিয়ে সংসার চলে না। সেই এলাকা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বিডিও অফিস। আরও কিছুটা এগোলেই গ্রাম পঞ্চায়েত। কিন্তু তার পরেও মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের খনতা তিওরপাড়ায় এক বারের জন্যও সরকারি ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ।
সংবাদমাধ্যমে তাঁদের দুর্দশার কথা জেনে ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে এসে এলাকার দুঃস্থ মানুষদের ত্রাণ দিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ দিকে কলকাতা থেকে দুঃস্থদের ত্রাণ দিতে হরিশ্চন্দ্রপুরে এলেও অভিযোগ, তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। সকালে পৌঁছনোর পরে স্থানীয় এক জনের উদ্যোগে একটি ধর্মশালায় তাঁদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তাঁদের দেখেই বাসিন্দাদের একাংশ লাঠিসোটা নিয়ে তাড়া করেন। গালিগালাজ করে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কয়েকশো বাসিন্দাকে ত্রাণ বিলি করে ফের কলকাতায় রওনা হন সংস্থার সদস্যরা। এতে অবশ্য ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের একাংশ।
লকডাউনের জেরে চাঁচল মহকুমার একাধিক এলাকায় সমস্যায় পড়েছেন খেটেখাওয়া মানুষের অনেকেই। সংবাদমাধ্যমে তাঁদের কথা জেনে রবিবার কলকাতা থেকে হরিশ্চন্দ্রপুরে আসেন রবি হাজারি, সোম্যদেব ভারতী, অরিন্দম কুণ্ডু, অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় নামে চার যুবক। স্থানীয় এক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকালে গাড়িতে ত্রাণ নিয়ে তাঁরা হরিশ্চন্দ্রপুরে পৌঁছন। স্থানীয় একটি ধর্মশালায় স্নান সেরে তাঁরা বেরিয়ে যাবেন বলে ঠিক হয়। অভিযোগ, ধর্মশালায় যেতেই লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে আসেন বাসিন্দাদের একাংশ। বিষয়টি জানতে পেরে কয়েক জন বাসিন্দা তাঁদের অন্য জায়গায় বিশ্রামের কথা বললেও যেতে রাজি হননি তাঁরা। এর পরে তাঁরা খনতা তিওরপাড়ায় গিয়ে দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিলি করেন। পরে গাঙনদিয়া মুচি ও হরিজনপাড়াতেও তাঁরা ত্রাণ দেন।
সোম্যদেব বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে জেনেই এখানে ত্রাণ দিতে এসে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ভাবিনি।’’ত্রান পেয়ে খুশি খনতার কয়েক জন বাসিন্দা বলেন, ‘‘শাকপাতা, আমসেদ্ধ খেয়ে দিন কাটছে। পাশেই বিডিও অফিস। কিন্তু সরকারি ত্রাণ মেলেনি।’’
মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে অনেককেই সাহায্য করা হচ্ছে। খনতার বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’