Coronavirus

‘খাবার কেড়ে নিচ্ছে, বাঁচব কী করে?’

শুধু বাবুল নন, চাঁচল মহকুমার কয়েকশো শ্রমিক এ ভাবেই আটকে রয়েছেন হরিয়ানার ডুন্ডেহারা এলাকায়। তাঁদের আর্জি— লকডাউন না ওঠা পর্যন্ত সেখানেই থাকতে চান।

Advertisement

বাপি মজুমদার 

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি

হরিয়ানায় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় সেলাইয়ের কাজ করেন বাবুল আলি। মালদহের চাঁচলে কলিগ্রামের বাড়িতে একা রয়েছেন তাঁর মা ছবি বেওয়া। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে কাজ বন্ধ বাবুলের। এ মাসে মাকে টাকাও পাঠাতে পারেননি। চেয়েচিন্তে কোনও রকমে দিন কাটছে মায়ের।

Advertisement

সমস্যায় দিন কাটছে বাবুলেরও। কেননা সামান্য যেটুকু টাকাপয়সা ছিল তা ফুরিয়েছে। রয়েছে অন্য সমস্যা। তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে একবেলা খাবার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা তা কেড়ে নিচ্ছেন।

শুধু বাবুল নন, চাঁচল মহকুমার কয়েকশো শ্রমিক এ ভাবেই আটকে রয়েছেন হরিয়ানার ডুন্ডেহারা এলাকায়। তাঁদের আর্জি— লকডাউন না ওঠা পর্যন্ত সেখানেই থাকতে চান। কিন্তু তাঁরা যাতে খেতে পান, সেই ব্যবস্থা করা হোক। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাজ্য প্রশাসনের কাছে সেই আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

হরিয়াণার গুরগাঁওয়ের উদ্যোগবিহার থানার ডুন্ডেহারা এলাকা একেবারেই দিল্লি সীমানায়। সেখানেই রয়েছেন চাঁচল মহকুমার বিভিন্ন এলাকার বহু শ্রমিক। তাঁরা জানান, অধিকাংশই কাজ করেন পোশাক তৈরির কারখানায়। অনেকে সপরিবার সেখানে রয়েছেন। কিন্তু লকডাউনে কী খেয়ে থাকবেন সেই চিন্তায় দিশাহারা তাঁরা।

চাঁচলের রাজাটোলার সোম্তাক আলি সেখানে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। কয়েক বছর আগে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সেখানেই সংসার পেতেছেন। স্ত্রী নাজিমা খাতুনও পরিচারিকার কাজ করতেন। সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছিল। মেয়েরাও স্কুলে পড়ত। কিন্তু এক মাস হতে চলল মোস্তাকের কাজ নেই। কাজ নেই নাজিমারও।

যেটুকু সঞ্চয় ছিল সব ফুরিয়েছে। নাজিমা এদিন ফোনে বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে প্রত্যেকেরই সঙ্কট বেড়েছে। খাবারও পাচ্ছিলাম। কিন্তু স্থানীয় লোকেরা এখন খাবার কেড়ে নিতে শুরু করেছে। বলছে, তোমরা যেখান থেকে এসেছ সেখান থেকেই খাবার দেবে। বাড়িও যেতে পারছি না। এমন হলে তো না খেয়ে মরে যাব।’’

মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভিন্‌ রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের যাতে সমস্যা না হয় তা রাজ্য সরকারের তরফে দেখা হচ্ছে। সেখানকার প্রশাসনকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। ওই শ্রমিকদের বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement