Coronavirus

করোনার চেয়ে বেশি ভয় অনাহারে

বুনিয়াদপুরের বড়াইলে আমার বাড়ি। বাড়িতে দিনমজুর স্বামী রয়েছেন। কিন্তু এখন কেউ কাজে ডাকছেন না। কাজ পাবেই বা কী করে? সবই তো বন্ধ।

Advertisement

অনিতা দেবনাথ

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি

এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেল দোকান খুলতে পারছি না। ব্যবসা বন্ধ। রোজগার নেই। ঘরে মজুত খাবারও ফুরিয়ে আসতে চলেছে। কবে সব ঠিক হবে জানি না। তবে আর কিছু দিন এমন চললে না খেয়ে মরতে হবে।

Advertisement

বুনিয়াদপুরের বড়াইলে আমার বাড়ি। বাড়িতে দিনমজুর স্বামী রয়েছেন। কিন্তু এখন কেউ কাজে ডাকছেন না। কাজ পাবেই বা কী করে? সবই তো বন্ধ। তাই বাড়িতে বেকার বসে রয়েছেন। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। যদিও এক মেয়ে আমাদের বাড়িতেই থাকে। তার এক মেয়েও রয়েছে। সবমিলিয়ে বাড়িতে চার জন মানুষ। বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে একটা ছোট গুমটি দোকান ছিল। সেখানে ঝালমুড়ি বিক্রি করতাম। স্বামী যেত দিনমজুরির কাজে। ঝালমুড়ি বিক্রি করে দিনে প্রায় ১০০-১৫০ টাকা রোজগার হত। স্বামীও যে দিন কাজ করত, সে দিন ২৫০ টাকা রোজগার করতে পারত। সবমিলিয়ে যা রোজগার হত তাতে দু’বেলা পেট ভরে খেতে পারতাম।

কিন্তু করোনাভাইরাস আসায় সব কিছু পুলিশ বন্ধ করে দিল। আমাদের বলল, দোকান খোলা রাখা যাবে না। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করলে নাকি এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সবাই ভয়ে দোকান বন্ধ করে দিল। আমরাও বাধ্য হয়ে দোকান বন্ধ করলাম। একসপ্তাহ ধরে দোকান বন্ধ। ঝালমুড়ি কেউ আর খাচ্ছেন না। স্বামীকেও কেউ কাজ দিচ্ছেন না। তাই দু’জনের রোজগারই বন্ধ।

Advertisement

এখন খাব কী, কী ভাবে দিন চলবে সেই চিন্তায় ঘুম আসছে না। আমরা কাজের মানুষ। কাজ করে খাই। তাই কাজ না থাকলে মন ভাল থাকে না। তার উপরে শুনছি এ ভাবে নাকি আরও অনেক সপ্তাহ ঘরে থাকতে হবে। তাই চিন্তা আরও বাড়ছে। তবে কয়েকদিন হল বুনিয়াদপুর ফুটবল মাঠে সকালে যে বাজার বসছে, সেখানে আমাদের কয়েক ঘণ্টার জন্য বসার অনুমতি দিয়েছে। তাই কিছু মুড়ি

শুধু বিক্রি করতে পেরেছি। সেটাও সামান্য। তাতে সংসার চলে না। ঝালমুড়ি বিক্রি না হওয়ায় রোজগার নেই বললেই চলে।

শুনলাম আমাদের মতো গরীবদের নাকি পাঁচ কিলোগ্রাম চাল আর এক কিলোগ্রাম আলু দেওয়া হবে। কিন্তু সেই চাল, আলু এখনও পেলাম না। মাথায় শুধু একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে, কী ভাবে দিন চলবে?

করোনার ভয় তাই এখন পাচ্ছি না৷ এখন একটাই ভয়, এমন চললে বাঁচব কী ভাবে? ঠাকুর যেন তাড়াতাড়ি সব ঠিক করে দেন। আবার যেন দোকান খুলে ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতে পারি।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন