পথ ভুলে মার খেল দম্পতি

রাত প্রায় পৌনে এগারোটা নাগাদ বছর পঞ্চাশের এক মহিলাকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ওই এলাকাতে ঘুরে বেড়াতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

গনপিটুনির সর্বোচ্চ সাজা রয়েছে মৃত্যুদণ্ড। অথচ আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির পরে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে একের পর এক মারধরের অভিযোগ আসছে ইসলামপুরেও। মঙ্গলবারে ইসলামপুর শহরের নুরি মসজিত সংলগ্ন এলাকার ঘটনার পর বুধবার রাতেও পথ ভুলে যাওয়া এক মহিলা ও তাঁর স্বামীকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর শুরু করে উত্তেজিত জনতা। এ দিন রাতে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকাতে এই ঘটনার খবর পেয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তখন পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে দেয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশ কর্মীকেও ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। যদিও পুলিশ পরে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে ইসলামপুর থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে ইসলামপুর থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতির বাড়ি মুর্শিদাবাদাদের বেলডাঙা এলাকাতেই। বুধবার তাঁরা ইসলামপুরের রামগঞ্জে চলে আসেন। রাত প্রায় পৌনে এগারোটা নাগাদ বছর পঞ্চাশের এক মহিলাকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ওই এলাকাতে ঘুরে বেড়াতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে তাঁর স্বামীও চলে আসেন। কিন্তু এত মানুষকে এক সঙ্গে দেখে ঘাবড়ে যান তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে দাবি, ওই দম্পতির কথা অসংলগ্ন ছিল। যুক্তির অভাবও ছিল। দাবি, এলাকার বাসিন্দাদের তাঁরা জানান, এক জনকে ওষুধ দেওয়ার কথা রয়েছে। এর কিছু পরেই এলাকার কয়েক জন তাঁদের ধরে মারধর করতে শুরু করে দেন। তবে এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা তাঁদের বাধাও দেন। ঘটনার খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

Advertisement

ওই মহিলা বেলোরা বিবি বলেন, ‘‘প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর স্বামী লালন খানের অশান্তির কারণে তাঁরা পালিয়ে শিলিগুড়ি যাচ্ছিলেন কাজের খোঁজে। সেখানে রাস্তায় তাদের ওই এলাকাতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ বেলোরা বিবি আরও বলেন, ‘‘তার পরে অনেক লোক এমন ভাবে তেড়ে এসেছিল বাচ্চাচোর বলে যে ভয় পেয়ে মনে যা এসেছে বলে দিয়েছি। এলাকার কিছু লোক না এলে বাঁচতে পারতাম না।’’ এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলিম মারধরে বাধা দেন। যদিও এলাকাতে ছেলেধরার গুজব চলছেই।

তবে পুলিশ জানিয়েছে, সচেতনতা বাড়াতে প্রচার শুরু হয়েছে। পুলিশ সুপার সচিন মাক্কার বলেন, ‘‘গত কাল রাতে পুলিশ গিয়ে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন