ফাটল: লাইনের এই হাল দেখেই ট্রেন থামান বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
লাইনে প্রায় এক ফিট ফাটল। আর ওই লাইন দিয়েই দুরন্ত গতিতে ছুটে আসছিল ট্রেন। তা দেখে গায়ে থাকা গামছা দিয়ে ট্রেন থামিয়ে দিলেন আমবাগানে পাহারা দেওয়া স্থানীয় যুবকেরা। তাঁদের তৎপরতায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল শিয়ালদহ-কামাখ্যা স্পেশাল ট্রেনটি।
শনিবার সকালে মালদহের গাজলের একলাখি স্টেশন সংলগ্ন পাঠানপাড়া গ্রামের কাছে এই ঘটনায় পর প্রায় দেড় ঘণ্টা আপ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। বাসিন্দাদের তৎপরতায় বিপত্তি এড়ানো গেলেও রেলের নজরদারি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। অভিযোগ, নিয়মিত নজরদারি না চালানোর ফলে লাইনের ফাটলের বিষয়টি নজরে আসেনি কর্তৃপক্ষের। এ নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ আপ লাইন দিয়ে এনজেপি গামী একটি মালগাড়ি যায়। সেই সময় বিকট শব্দ শুনতে পান আম বাগানে পাহারায় থাকা যুবকেরা। তাঁরা কাছে গিয়ে দেখে লাইনে ফাটল রয়েছে। প্রায় এক ফিট লাইনের পাত ভেঙে গিয়েছে। সেই সময়ই ওই লাইন দিয়ে দ্রুত গতিতে আসছিল শিয়ালদহ-কামাখ্যা স্পেশাল ট্রেনটি। তড়িঘড়ি মিঠুন শেখ, বাবলু শেখ-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের গলায় থাকা গামছা দুলিয়ে দিয়ে ট্রেনটি থামান। তাঁদের প্রায় ৫০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনটি। স্থানীয়েরা ছুটে গিয়ে চালককে পুরো ঘটনাটি জানান। তারপরেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রেলের কর্মী, আধিকারিকেরা। স্থানীয় বাসিন্দা মহিদুর রহমান বলেন, ‘‘ফাটল দেখে আমরা আর দেরি করিনি। ট্রেন আসতেই গামছা দিয়ে ট্রেনটিকে থামিয়ে দিই।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটি পাতের জয়েন্টের মাঝে ফাটলটি ধরেছে। বৃষ্টিতে মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। ফলে মালগাড়ির চাপ পড়ে ভেঙে গিয়েছে। রেলকর্মী উপেন রাজবংশী বলেন, ‘‘খবর পেয়েই লাইন মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। এখন স্বাভাবিক গতিতেই ট্রেন চলাচল করছে।’’ স্টেশন ম্যানেজারকে ফোন করা হলে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। লাইন মেরামতের কাজ করতে সকাল নটা বেজে যায়। আপ লাইনে সেই সময় তেমন ট্রেন না থাকায় শুধু ওই ট্রেনটিই আটকে ছিল।