বেকায়দায়: বাসিন্দারা বেঁধে রাখেন কুমিরটিকে। ছবি: তথাগত সেনশর্মা
শুশুকের দর্শন হামেশাই মেলে মালদহের গঙ্গায়। ভুতনিতে গঙ্গার পাড়েই হোক বা মানিকচকের ঘাটে, শুশুক দর্শন নতুন নয়। মাঝেমধ্যে ঘড়িয়ালেরও দেখা মেলে গঙ্গায়। জেলেদের জালে বেশ কয়েক বার ঘড়িয়াল ধরাও পড়েছিল। কিন্তু কুমির? না, গত কয়েক দশকে মালদহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় গঙ্গায় কুমিরের দেখা মেলেনি বলেই জানাচ্ছে বন দফতর।
এ বার জানুয়ারির শুরুতে মালদহের কালিয়াচক ২ ব্লকের শুভানিটোলা গঙ্গার চরে দেখা মিলেছিল কুমিরের। চরে চাষ করতে গিয়ে সেই কুমিরের দেখা পেয়েছিলেন জাকির হোসেন, শাহজাহান শেখরা। জাকির ঝুঁকি নিয়ে মোবাইলে সেই কুমিরের ছবিও তোলে। সে দিন চরের একপাশে রোদ পোহাচ্ছিল কুমিরটি। প্রায় তিন মাস পর এ বার আবার কুমিরের দেখা মিলল ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে পারলালপুর ঘাটে। শনিবার ভোররাতে মাছ ধরার সময় জেলেদের জালে ধরা পড়ে বড়সড় কুমিরটি। বনদফতরের কর্মীরা এসে সেটিকে ছেড়ে দেয় গঙ্গারই উজানে।
এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে, মালদহের গঙ্গায় কুমির কি একটাই না একাধিক? এ দিন যে মৎস্যজীবীর জালে কুমিরটি উঠেছিল সেই মহাদেব চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই কুমিরটি ধরা পড়ার পর আমরা এ দিন আরও তিনটি কুমির দেখেছি।’’ আর এক মৎস্যজীবী ভরত রায় দাবি করেন, তিনিও দিন ১৫ আগে গঙ্গায় একটি কুমির দেখেছিলেন। সে দিন রাতে পারলালপুর ঘাটে বেঁধে রাখা নৌকাতে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। মাঝরাতে নৌকাটি কিছুর ধাক্কায় দুলে উঠেছিল। মোবাইলের আলোয় জলে একটি কুমির দেখতে পেয়ে পড়িমড়ি করে নৌকা থেকে লাফিয়ে ঘাটে উঠে পড়েন। পরে আর দেখেননি সেটিকে।
মালদহ জেলা বনাধিকারিক কৌশিক সরকার জানান, জানুয়ারি মাসে শুভানিটোলা চরে যে কুমিরটি দেখা গিয়েছিল সেটা সম্ভবত ডিম পারতে এসেছিল। ওই কুমিরটি ছিল ‘মার্শ ক্রোকোডাইল’। এ দিনের কুমিরটিও তাই। তিনি বলেন, ‘‘এগুলি খুবই হিংস্র। নদীতে আরও কুমির থাকতে পারে। আমরা নজর রাখছি।’’