ফসল জলমগ্ন, দিশাহারা চাষি

ধার দেনা করে তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের মিহাহাটের শ্যাম যাদব। দুই বিঘা জমিতে পাট চাষও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফুলহারের জলে ভেসে গিয়েছে সব কিছু। এখন দু’বেলা খাবার জোটানোর চিন্তায় দিশেহারা শ্যাম যাদব।

Advertisement

বাপি মজুমদার

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ০২:৩১
Share:

খেত ডুবেছে জলে। — নিজস্ব চিত্র

ধার দেনা করে তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের মিহাহাটের শ্যাম যাদব। দুই বিঘা জমিতে পাট চাষও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফুলহারের জলে ভেসে গিয়েছে সব কিছু। এখন দু’বেলা খাবার জোটানোর চিন্তায় দিশেহারা শ্যাম যাদব। ফুলহারের বন্যা ঘুম কেড়ে নিয়েছে রামকিশোর যাদব, ধীরেন যাদব, শেখ উসমানদের মতো হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ও রতুয়া-১ ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতের ৩২টি মৌজার কয়েক হাজার চাষির।

Advertisement

বিঘার পর বিঘা জমি ফসলের তলায়। অনেকের ঘরবাড়িও ভেসে গিয়েছে ফুলহারে। ওই দু’টি ব্লকে এবারের বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ আড়াই কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে কৃষি দফতরের প্রাথমিক হিসেব। চাষিদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব হয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার দুই বিধায়কও।

জেলা কৃষি দফতরের সহ অধিকর্তা(তথ্য) বিদ্যুৎ কুমার বর্মন বলেন, ‘‘আমরা বন্যায় ক্ষতির রিপোর্ট পাঠিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়টি রাজ্য সরকারের অধীনে।’’ হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম ও রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বারের বন্যায় হাজার হাজার চাষি সর্বস্বান্ত হয়েছেন। সাহায্য না পেলে ওদের না খেয়ে মরতে হবে। ক্ষতিপূরণের দাবি সংশ্লিষ্ট সব মহলকেই জানাব।’’ ক্ষতির পরিমাণ কম করে দেখানো হচ্ছে এমন অভিযোগও তুলেছেন দুই বিধায়ক। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কৃষি দফতর।

Advertisement

জানা গিয়েছে, ফুলহারের বন্যায় দু’টি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা দীর্ঘদিন ধরে জলের তলায়। এখনও দু’টি ব্লকের বহু এলাকা জলের তলায় থাকায় এখনও বেশ কিছু এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। প্রাথমিক হিসেবে রতুয়া-১ ব্লকের বিলাইমারি, মহানন্দটোলা, দেবীপুর ও কাহালা পঞ্চায়েতের ১৮টি মৌজায় ২৭৮ হেক্টর জমির ফসল ডুবে নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ২২৮ হেক্টর জমির পাট ও ৫০ হেক্টর জমির ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের। এখানকার ইসলামপুর, দৌলতনগর, ভালুকা ও মালিওর-১ পঞ্চায়েতের ১৪টি মৌজায় পাট, আমন ধান, ভুট্টা, সব্জি মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ৬৬৯ হেক্টর জমির ফসলের।

হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা কিঙ্কর দে সরকার বলেন, ‘‘জল জমে থাকায় এখনও অনেকে পাট কাটতে পারছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন