Coronavirus

শিবিরে ভিড়, ছাউনি মাঠেই

ধেয়ে আসা ঘুর্ণিঝড়ে তাঁদের থাকার অস্থায়ী এই পরিকাঠামো ঠিক থাকবে তো?

Advertisement

জয়ন্ত সেন

উত্তর লক্ষ্মীপুর শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৬:১৫
Share:

ঠাঁই: সরকারি কোয়রান্টিনে জায়গা মেলেনি। তাই কাহালা গ্রামে তাঁবু টাঙিয়ে মাঠেই থাকছেন ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকরা। নিজস্ব চিত্র

কেউ ফিরেছেন বাস ভাড়া করে। কেউ ট্রাকে। গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এলাকার হাই ও প্রাথমিক মিলিয়ে প্রায় ১৬টি স্কুলে সরকারি কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড় এতই বেশি যে স্কুলগুলির ক্লাসঘরে 'ঠাঁই নেই, ঠাঁই নেই' অবস্থা। কার্যত গাদাগাদি করেই থাকতে হচ্ছে।

Advertisement

এক দিকে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা, অন্য দিকে সরকারি কোয়ারান্টিনে জায়গার অভাব— তার জেরে ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা একাধিক শ্রমিক নিজেদের উদ্যোগেই কেউ আশ্রয় নিচ্ছেন আমবাগানে, কেউ খোলা মাঠে। বাঁশের মাচা করে বা বাড়ি থেকে চৌকি এনে তাঁরা থাকছেন। উপরে ত্রিপলের আচ্ছাদন। কেউ সেখানেই রান্না করে খাচ্ছেন। কারও খাবার আসছে বাড়ি থেকেই। এ ভাবেই ১৪ দিনের কোয়রান্টিন কাটাতে চান তাঁরা। তবে, ধেয়ে আসা ঘুর্ণিঝড়ে তাঁদের থাকার অস্থায়ী এই পরিকাঠামো ঠিক থাকবে তো? সেই শঙ্কাও রয়েছে তাঁরা।

এই ছবি কালিয়াচক ২ ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীপুর পঞ্চায়েতের গ্রামে গ্রামে।

Advertisement

জানা গিয়েছে, মুম্বই থেকে ট্রাকে রবিবার জেলায় ফিরেছিলেন উত্তর লক্ষ্মীপুরের কুড়ানটোলা গ্রামের হুমায়ুন শেখ, নজরুল ইসলাম, সাহেব শেখ ও সোহেল রানা। তাঁদের বাড়ির কাছেই রয়েছে ভগৎটোলা প্রাথমিক স্কুল। যেখানে সরকারি ভাবে কোয়ারান্টিন চালু হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে। প্রথমে তাঁরা সেখানেই গিয়েছিলেন। হুমায়ুন বলেন, "ওই স্কুলের চারটি ক্লাসঘরে গিয়ে দেখি, এক একটি ঘরে ৩০ জনের বেশি আছেন। কিন্তু ভিড়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় আমরা আর ওই স্কুলে থাকা নিরাপদ মনে করলাম না। তাই গ্রামের পাশেই একটি আমবাগানে বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করে, উপরে ত্রিপল টাঙিয়ে থাকার ব্যবস্থা করলাম। প্রতিদিন দু'বেলা করে বাড়ি থেকে খাবার আসছে। পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবে এ ভাবেই ১৪ দিন কাটিয়ে দিতে চাই।"

ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই কাহালা গ্রামে মহারাষ্ট্র থেকে ফেরা সাত পরিযায়ী শ্রমিক মাঠে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের একজন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে সরকারি কোয়ারান্টিন রয়েছে। কিন্তু স্কুলের প্রতিটি ঘরেই শ্রমিকদের ভিড় থিকথিক করছে। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে আশঙ্কা করে আমরা গ্রামে ফিরে তাঁবু টাঙিয়ে নিলাম। বাড়ি থেকে সবার থাকার চৌকি পাঠিয়ে দিয়েছে। এখানেই রান্না করে খাচ্ছি। কিন্তু প্রবল ঝড় ধেয়ে আসছে শুনে কিছুটা আতঙ্কে রয়েছি।"

উত্তর লক্ষীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আসমিনা খানম বলেন, "ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের ১৪ দিনের জন্য সরকারি কোয়রান্টিনে রাখতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। সেগুলিতে এখনও পর্যন্ত বারোশোর বেশি শ্রমিক রয়েছেন। ফলে স্থান সংকুলানে একটু সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক নিজেকে ও তাঁদের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে গ্রামের খোলা মাঠে, বাগানে তাঁবু টাঙিয়ে আছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন