প্রতীকী ছবি।
ইন্দিরা গাঁধীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালনের মধ্যে দিয়েই পঞ্চায়েতে ঘুরে দাঁড়াতে চায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস। আজ, রবিবার বালুরঘাট শহরের কংগ্রেস ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলার প্রতিটি বুথ ও অঞ্চল সভাপতি ও জেলাস্তরের কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে পঞ্চায়েতি রাজ শীর্ষক কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
একদা এই জেলায় কংগ্রেসের মজবুত সংগঠন বিপ্লব মিত্রের হাত ধরে গড়ে উঠেছিল। তৃণমূল গঠনের সঙ্গে জেলায় কার্যত গোটা কংগ্রেস দলটাই বিপ্লববাবুর সৌজন্যে তৃণমূলে মিশে যায়। গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং সিপিএমের সঙ্গে জোটের দৌলতে গঙ্গারামপুর বিধানসভা আসনটি কংগ্রেসের দখলে আসে। বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ অনেকটা বদলেছে। সিপিএম আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। তবে আশাবাদী জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি বুথ ও অঞ্চল সভাপতি মিলিয়ে অন্তত এক হাজার কর্মী আসবেন। সমাবেশ থেকে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার ও প্রস্তুতির রণকৌশল তৈরি করে মাঠে নামা হবে।’’
শাসক দলের নেতারা অবশ্য বলছেন জেলায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক পরিস্থিতি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে সেখান থেকে কতটা ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। গঙ্গারামপুরের কংগ্রেস বিধায়ক গৌতম দাস অবশ্য তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘শাসক দল পরিচালিত জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েতগুলিতে কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার দখল নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া কেন্দ্রের জনবিরোধীনীতির জন্য বিজেপির প্রতি মানুষের আগ্রহ আগের মতো নেই। সেই জায়গায় কংগ্রেসকে নিয়ে মানুষ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। আমরা সেই জায়গাটা ধরে এগোতে চাইছি।’’
কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর, বংশীহারি, হিলি ও কুশমণ্ডি ব্লকেও চলছে টেন্ডার নিয়ে শাসক দলের ওই কাজিয়া। একদিকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতি ও রাজ্য সরকারের তৃণমূল স্তরে গ্রাম উন্নয়নের কাজকর্মে সমস্যায় পড়া সাধারণ মানুষ বিরক্ত হয়ে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন।
কংগ্রেসের ওই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে তৃণমূল পরিচালিত জেলাপরিষদের সভাপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, ‘‘বহু প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে কাজ শুরুর পথে। তাছাড়া জেলায় কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব নেই। ওদের কথা মানুষ শুনবে কেন?’’
তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বক্তব্য, ‘‘কিছুদিন বিজেপি হাওয়ায় ভেসে মানুষও ভালমন্দ বুঝতে পারছেন। পঞ্চায়েত ভোটে ওই তিনদল মিলে ঘোঁট পাকানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু সফল হবে না।’’