Jalpaiguri

বন্ধ হয়ে গেল সেচ দফতরের বাঁধের কাজ

নকশা তাঁদের হাতে দেওয়া হয়নি এবং সেচ দফতর না ঠিকাদার সংস্থা কেউ কাজের বিষয়ে তাঁদের বিস্তারিত জানায়নি বলেই কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৩ ০৭:১৮
Share:

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বাধায় বন্ধ হয়ে গেল কাজ। —প্রতীকী চিত্র।

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বাধায় বন্ধ হয়ে গেল সেচ দফতরের প্রায় দেড় কোটি টাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ। জলপাইগুড়ির বেলাকোবার ভায়াপাড়া থেকে জোরাবান্ধা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচশো মিটার বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল মাসখানেক আগে। গত বৃহস্পতিবার এবং এ দিন শুক্রবার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যেরা দলবল নিয়ে এসে কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তাতেই বাঁধের কাজ বন্ধ হয়েছে বলে দাবি।

Advertisement

তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যদের বক্তব্য, কী ভাবে বাঁধ তৈরি হবে, তার নকশা তাঁদের হাতে দেওয়া হয়নি এবং সেচ দফতর না ঠিকাদার সংস্থা কেউ কাজের বিষয়ে তাঁদের বিস্তারিত জানায়নি বলেই কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের অন্দরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। তৃণমূলের অন্য অংশ এই ঘটনায় অখুশি। বিরোধীদের অভিযোগ, কাজের ‘বখরা’ নিয়ে গোলমালের জেরেই, তৃণমূলের একাংশ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

বেলাকোবায় ওই বাঁধ তৈরির টেন্ডার হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। কাজ শুরু হয়েছে মাসখানেক আগে। তখন থেকেই তৃণমূলের একাংশ কাজে বাধা দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ। সে বাধা ‘প্রবল’ হওয়ায় আপাতত কাজই বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা কাজ বন্ধ করার কথা প্রকাশ্যে বলছেনও। বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শ্যামলী রায় বলেন, ‘‘কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। কাজের বিশদ বিবরণ চেয়েছিলাম। কিন্তু পাইনি। পঞ্চায়েত সদস্যদের না জানিয়ে কাজ হচ্ছে। আমাদের তো জনগণকে জবাব দিতে হয়!’’ তৃণমূলের আর এক পঞ্চায়েত সদস্য নীলতি রায়ও গিয়েছিলেন কাজ বন্ধ করতে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সেচ দফতরেও গিয়েছিলাম কাজের বিশদ বিবরণ জানতে। জানতে পারিনি। আমাদের সন্দেহ, এই কাজে দুর্নীতি হতে পারে। তাই কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’’ তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, বালি-মাফিয়াদের সঙ্গে যোগসাজশে এই কাজ হচ্ছে।

Advertisement

সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই কাজ শুরু হয়েছিল। পুরো বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর বেশি আমাদের কিছু করার নেই।’’

তৃণমূলের বাধায় রাজ্য সরকারের কাজই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিরোধীরা তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘তোলার ভাগ নিয়ে ঝামেলা। তাই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এখন লড়াইটা তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের। তাই পঞ্চায়েত ভোট করাতে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘আমাদের জেলার চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় ওই এলাকার বিধায়ক। তিনিই যা বলার, বলবেন।’’ খগেশ্বর রায়ের মন্তব্য, ‘‘আমি কলকাতায়। ফিরে গিয়ে খোঁজ নিয়ে বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন