ফেরা: বাড়ি ফেরার পথে আহত পর্যটকেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
চোরা কুয়াশার মধ্যে গাড়ির গতির তাল সামলাতে না পারাতেই পশ্চিম সিকিমের ঋষিতে গাড়ি খাদে পড়েছিল কি না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় দেশের অন্য রাজ্যগুলির মতো ট্যাক্সি নম্বর বা পর্যটকদের গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের উপর আরও জোর দেওয়া কথা ভাবছে পুলিশ। আপাতত শিলিগুড়ি দার্জিলিং এবং সিকিম পাহাড়ে যাতায়াতের জাতীয়, রাজ্য সড়ক বা এশিয়ান হাইওয়ে ‘স্পিডগানে’র উপর জোর দেওয়া শুরু হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, শুধু স্পিড গান নয়, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গাড়ির গতি বেঁধে দেওয়ার প্রযুক্তিও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে চালু হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ে ঘেরা এই অঞ্চলে অন্তত পর্যটকদের জন্য গাড়ির ক্ষেত্রে ওই প্রযুক্তি যাকে ‘স্পিড গর্ভনর’ বলা হয় তার ব্যবহার শুরু হোক।
পুলিশ ও পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, দিল্লি, নয়ডা, রাজস্থানের মতো বিভিন্ন জায়গায় প্রতিটি ট্যাক্সি নম্বরের গাড়িতে স্পিড গর্ভনর লাগানো বাধ্যতামূলক হয়েছে। প্রাইভেট নম্বরের গাড়ির ক্ষেত্রে এমন নিয়ম নেই। কিন্তু প্রাইভেট নম্বর গাড়ি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করলে তাতে ওই প্রযুক্তি না থাকলে ৫-১০ হাজার টাকা অবধি স্পট জরিমানা করা হয়। নতুন নিয়মে সমস্ত ধরনের এক্সপ্রেস হাইওয়ে বা ফোরলেনে রাস্তায় চালক চেষ্টা করলেও ৮০ কিমি-র বেশি ঘন্টায় গতিবেগ ওঠাতে পারেন না। আর মালভূমি, পাহাড় বা জনবহুল এলাকায় সাধারণভাবে চালককে ৪০ কিমি ঘন্টায় গাড়ি চালতে হয়। তা না হলে ট্রাফিক পুলিশের স্পিডগান এবং সিসিটিভিতে তা ধরা পড়ে। পাহাড়ি পথের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্পিডগান, সিসিটিভি বা স্পিড গর্ভনর দিয়ে গতিবেগ ৪০-৫০ কিলোমিটার মধ্যে বাঁধতে পারলে দুর্ঘটনার হার কমবে বলে অফিসারেরা মনে করছেন।
ট্রাফিক পুলিশের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, শিলিগুড়িতে আপাতত বাগডোগরা বিমানবন্দর লাগোয়া এশিয়ান হাইওয়ে, এনজেপি স্টেশন লাগোয়া জাতীয় সড়ক এবং ইস্টার্ন বাইপাস ও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্পিডগান ব্যবহার হচ্ছে। গত এক মাসে প্রাইভেট এবং ট্যাক্সি নম্বর মিলিয়ে ৪০টির উপর মামলাও হয়েছে। এ বার পাহাড়ি পথে গতি নিয়ন্ত্রণের চিন্তাভাবনার সময় এসে গিয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে গাড়ি গতিতে নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা তৈরি জরুরি। শিলিগুড়ি পুলিশে ডিসি (ট্রাফিক) নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আমরা পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার গাড়িগুলির ক্ষেত্রে বেশি নজর রাখছি। নথিপত্র, ফিটনেট থেকে গতির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা চলছে। ধীরে ধীরে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে।’’
দার্জিলিং পুলিশের কয়েক জন অফিসার জানান, পাহাড়ে দুর্ঘটনার ৮০-৯০ শতাংশ বাঁকের মুখে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালক গতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে খাদে পড়েন।