পাহাড়ে বহুতল তৈরিতে আইন না মানার অভিযোগে তিনটি নির্মীয়মাণ ভবনের সম্প্রসারিত অংশ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিল দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। তিনটি ভবনই দার্জিলিং শহরে। আগামী ছ’মাসের মধ্যে ভবনগুলির অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলার জন্য পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
এই নির্দেশ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপড়েনও। প্রশাসন থেকে পুরসভাকে এ ভাবে কোনও ‘নির্দেশ’ দিতে পারে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ের পুরসভাগুলি মোর্চার দখলে রয়েছে। মোর্চা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, যে বাড়িগুলির অবৈধ অংশ ভাঙতে প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে সেগুলিকে পুরকর্তৃপক্ষও একাধিকবার নোটিস দিয়েছিল। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে তা সম্ভব হয়নি। এবার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে প্রশাসনের এই হস্তক্ষেপ ‘চাপ বাড়ানো’ ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে মোর্চার অভিযোগ। প্রশাসনের নির্দেশের আইনগত দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ হবে বলে মোর্চা হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
দার্জিলিং পাহাড়ে বিধি ভেঙে বহুতল তৈরির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এ নিয়ে পুরসভা-প্রশাসনের একাধিক বৈঠকও হয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পাহাড়ে বহুতল তৈরি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। মাস কয়েক আগে দার্জিলিঙে পুরনো একটি বহুতল ভেঙে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তারপরেও পুরসভার তরফে নোটিস দেওয়া ছাড়া আর কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রের খবর, পুরসভা পদক্ষেপ না করাতেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘আইন মেনেই পদক্ষেপ হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে পুরসভার যা সাহায্য প্রয়োজন তা সবই করা হবে।’’
বিধি অনুযায়ী দার্জিলিঙের পাহাড়ি এলাকায় সাড়ে ১১ মিটারের উঁচু কোনও ভবন তৈরি করা যায় না। সেই বিধি ভঙ্গ করাতেই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। সূত্রের খবর, দার্জিলিং জিমখানা, নেহেরু রোড এবং ক্লাব সাইডে তিনটে ভবন চিহ্নিত করে নোটিস পাঠানো হয়েছে। দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান অমর রাই বলেন, ‘‘গত শনিবার নোটিস পেয়েছি। ওই বাড়িগুলিকে আমরাও নোটিস পাঠিয়েছিলাম। আমরাও চাই সেগুলি ভাঙা হোক। তবে প্রশাসন যে ভাবে নির্দেশ দিয়েছে তার আইনগত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’