ভিড় ঘিরে প্রত্যাশা পাহাড়ের

পর্যটক ধরে রাখতে হোটেল মালিকদের ছাড় দিতে হচ্ছে। যেমন পাহাড়ে অশান্তি শুরুর আগে দৈনিক ১৯০০ টাকায় একটি হোটেলে থেকে গিয়েছেন কলকাতার বাসিন্দা শুভাশিস রায়।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু ও প্রতিভা গিরি

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫১
Share:

উদ্বোধন: উৎসবে অত্রি ভট্টাচার্য ও বিনয় তামাঙ্গ। —নিজস্ব চিত্র।

পথেঘাটে মানুষের ভিড় রয়েছে। কিন্তু হোটেল, পোশাকের দোকান বা খাবারের দোকানগুলোতে আগের সেই রমরমা আর নেই। কারণ সে ভাবে শুরু হয়নি পর্যটকদের আনাগোনা। তাতেই পাহাড়ে লাগাতার বন‌্ধ ব্যবসার কতটা ক্ষতি করেছে তা টের পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বন্‌ধের পরিস্থিতিতে এ বার পুজোর মরসুম পুরোটাই মাটি হয়েছে। তারপরেই ছিল বড় দিনের উৎসবকে ঘিরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা। কিন্তু তাও খুব বেশি আশাপ্রদ নয়। খুব বেশি হলেও কারও ৩০ শতাংশ ব্যবসা হচ্ছে, কারও ৪০ শতাংশ।

Advertisement

পর্যটক ধরে রাখতে হোটেল মালিকদের ছাড় দিতে হচ্ছে। যেমন পাহাড়ে অশান্তি শুরুর আগে দৈনিক ১৯০০ টাকায় একটি হোটেলে থেকে গিয়েছেন কলকাতার বাসিন্দা শুভাশিস রায়। এখন সেই ঘরই হোটেল মালিক তাঁকে ১৩০০ টাকায় দিচ্ছেন। এমনকি সঙ্গে কচিকাঁচা থাকলে আগে অতিরিক্ত ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে লাগত। এখন পুরোটাই ছাড় মিলছে। বারাসতের বাসিন্দা শুভাশিসবাবু বলেন, ‘‘গত ২ জুন শেষ ঘুরে গিয়েছি দার্জিলিঙে। বছরে দু’বার তো আসাই হয়। কিন্তু বনধ, অশান্তি চিন্তায় ফেলেছিল। এখন পরিস্থিতির উন্নতি শুনেই এসেছি। হোটেলে ছাড়ও মিলছে।’’

তবে বুধবার তিস্তা রঙ্গিত পর্যটন উৎসবের বার্তা কত মানুষের কাছে পৌঁছবে সেই আশায় পাহাড়ের ব্যবসায়ী ও পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলির সদস্যরা। বড়দিন আগের মতো জমে না উঠলেও কিছুটা আশা জাগিয়েছে। তবে ঠান্ডার সময় তিন মাস ‘অফ সিজন’। সে সময় পর্যটক এমনিতেই অর্ধেক থাকত। এ বছর আরও কম থাকবে বলেই আশঙ্কা। তারপর গরমের মরসুমে পর্যটকের সংখ্যা কতটা বাড়বে তা নিয়েও দোলাচলে তিনি। দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজয় খান্না বলেন, ‘‘কারও ৩০ শতাংশ, কারও ২০ শতাংশ ব্যবসা হচ্ছে। সার্বিক ভাবে হোটেল ব্যবসা ২৫ শতাংশ হচ্ছে বলা যায়।’’ ওল্ড ক্লাব সাইড ট্রান্সপোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিযেশনের সদস্যরা মনে করছেন তাদের ব্যবসা ৩০ শতাংশের মতো।

Advertisement

শৈল শহরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রেস্টুরেন্ট গ্লেনারিজ,কেভেনটার্সে ভিড় হচ্ছে। কেভেন্টার্সের তরফে রাহুল ঝা জানান, আগে এ সময় যে ব্যবসা হত, এখন তার ২৫ শতাংশ হচ্ছে বলা যায়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে।’’ গ্লেনারিজের এক কর্মীর কথায়, ‘‘অনেকটাই ভাল হয়েছে। আরও হবে বলেই আশা।’’

অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছেন গ্রেগ স্যাভাগে, কেটি টিউদের চার জনের একটি দল। গ্রেগ বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে এই প্রথম এসেছি। কয়েক মাস আগে এখানে কোনও সমস্যা চলছিল বলে শুনেছি। এখন অবশ্য আমাদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। যাই ঘটুক পর্যটকদের যাতে কখনই সমস্যা না হয় সেটা সব সময় দেখা দরকার বলেই মনে করি।’’

এ দিন তিস্তা রঙ্গিত উৎসবে উপস্থিত ছিলেন তেনজিং নোরগের ছেলে জামলিং তেনজিং, বক্সিংয়ে আন্তর্জাতিক রেফারি গনু গিরিকে। উৎসবের মশাল জ্বালান জামলিং তেনজিং। কয়েকদিন কার্শিয়াং, কালিম্পং, মিরিকেও উৎসব চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন