সব ঠিক থাকলে পাহাড়ে বন্ধ ওঠার খুব বেশি দেরি নেই বলে মনে করছেন দার্জিলিঙের রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনেকেই। কিন্তু, বন্ধ তোলার কথা ঘোষণা করবে কে, তা নিয়েই আন্দোলনকারীদের মধ্যে শুরু হয়েছে ঠেলাঠেলি। আজ, শুক্রবার দার্জিলিঙে গোর্খাল্যান্ড সমন্বয় কমিটির (জিএমসিসি) বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানেই বন্ধ তোলার দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনা হবে। এমনকী, প্রয়োজনে নবান্নে আলোচনা শুরুর আগে পাহাড়ের তরফে সদিচ্ছার বার্তা জোরদার করতে আগাম বন্ধ তোলার সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে। সে জন্য জিএমসিসি-র শরিক দলগুলিও দ্রুত বন্ধ তুলতে মোর্চার উপরে চাপ বাড়াতে শুরু করেছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা স্বরাজ থাপা বলেন, ‘‘জিএমসিসি-র বৈঠকে অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হবে। দেখা যাক কী হয়।’’
মোর্চার অন্দরের খবর, ২৯ অগস্টের আগে বন্ধ তোলা হলে সর্বদল বৈঠকে পাহাড়ের আন্দোলনকারীরা সদিচ্ছার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারবেন বলে দলের অনেকের ধারণা। সে জন্য মোর্চার নেতারাও বন্ধ তোলার ঘোষণার পথ খুঁজতে শুরু করেছেন। তাঁরা একান্তে জানান, জিএমসিসি নেতারা কয়েক জন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বন্ধ তোলার ভার মোর্চাকেই নিতে হবে।
কেন? জিএমসিসি সূত্রে বলা হচ্ছে, এই কমিটি গঠনের আগেই পাহাড়ে অনিদিষ্টকালের বন্ধ ডেকেছে মোর্চা। পরে ওই বন্ধকে সমর্থন করে জিএমসিসি। কিন্তু, পাহাড়ের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে বন্ধ তোলার কথা অনেক বার জিএমসিসি বৈঠকে আলোচনা হলেও মোর্চা তাতে রাজি হয়নি। এমনকী, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বাড়িতে স্মারকলিপি দিতে গেলে তিনিও একই অনুরোধ করেন। তখন জিএমসিসি বন্ধ তোলার পক্ষে মত দিলেও মোর্চা নেতারা বেঁকে বসেন। তাই জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা জানান, কৌশলগত কারণেই নবান্নে আলোচনায় বসার আগে বন্ধ তোলার সিদ্ধান্ত হওয়া জরুরি। মোর্চা নেতাদেরই সেটা নিশ্চিত করতে হবে বলে জাপের এক মুখপাত্রও মনে করেন। অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতারও একই মত।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালীন হিংসা-হামলার ঘটনা পাহাড়বাসীরাও মেনে নিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘৭২ দিন ধরে পাহাড়ের মানুষ কী দুর্দশায় আছেন, তা রোজই বুঝতে পারি। তবে কেউ কেউ বন্ধ উপেক্ষা করতে শুরু করেছেন। এখন আন্দোলনকারীরা এই নিয়ে আলোচনা করছেন শুনছি। দেরিতে হলেও বোধোদয় হচ্ছে।’’