লাইনের পাশে চিতাবাঘের দেহ

বন দফতর সূত্রের খবর, অটল চা বাগান এবং কিরণচন্দ্র চা বাগানের মাঝের ব্রডগেজ রেল লাইনের ধারে পুরুষ চিতাবাঘটির দেহ পড়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৮ ০২:১৯
Share:

রেল লাইনের ধারে উদ্ধার চিতাবাঘের দেহ। নিজস্ব চিত্র

রেল লাইনের ধার থেকে এক পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার করাকে কেন্দ্র করে রহস্য দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নকশালবাড়ি ব্লকের হাতিঘিসা এলাকার ঘটনা। বন দফতর সূত্রের খবর, অটল চা বাগান এবং কিরণচন্দ্র চা বাগানের মাঝের ব্রডগেজ রেল লাইনের ধারে পুরুষ চিতাবাঘটির দেহ পড়েছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর বনকর্মীদের অনুমান, সজোরে কোথাও ধাক্কা খেয়ে চিতাবাঘটি ছিটকে পড়েছিল। তার জেরে মুখ, পায়ে এবং শরীরে আঘাত লাগে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বুনোটির মৃত্যু হয়। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাটি ঘটতে পারে। এলাকাটি কার্শিয়াং বন দফতরের অধীনে।

Advertisement

ডিএফও (বন্যপ্রাণ) সন্দীপ বেরওয়াল বলেন, ‘‘চিতাবাঘটির দেহ ময়নাতদন্ত করানো ছাড়াও বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ৩/৪ দিনের মধ্যে রিপোর্ট আসার কথা। তাতে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ তিনি জানান, স্থানীয়েরা কোনও ট্রেনের সঙ্গে চিতাবাঘটির ধাক্কা লেগেছিল বলে সন্দেহ করছেন। রেলের সঙ্গে তাঁরা কথা বলছেন। এখনও রেলের তরফে সরকারি ভাবে কোনও কিছু জানানো হয়নি।

বন দফতর সূত্রের খবর, ওই এলাকায় একাধিক চা বাগান রয়েছে। হাতি এবং চিতাবাঘের গতিবিধি এলাকাগুলিতে খুব বেশি। গত বছর এই চেঙ্গা নদীর সেতু এবং রেল লাইনের ধার থেকে একটি দাঁতাল হাতির দেহ মিলেছিল। সেবার একটি মালগাড়ির ধাক্কায় হাতিটির মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। এ বার বেশি রাতে বা ভোরের দিকে তা হয়েছিল কি না দেখা হচ্ছে। ওই রুটে জংশন, নকশালবাড়ি, আলুয়াবাড়ি, কাটিহারের মধ্যে ট্রেন চলে।

Advertisement

তদন্তে নেমে বন কর্তারা জেনেছেন, বিহারে দিকে বুধবার রাত সাড়ে ১২টা এবং বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ দু’টি ট্রেন ওই রুটে চলাচল করেছে। সেগুলোর কোনওটির সঙ্গে চিতাবাঘটির ধাক্কা লেগেছিল কি তাই দেখা হচ্ছে। মুখে পাশের আঘাত বা রক্তক্ষরণ দেখে জোরে আঘাতের স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ অটল বাগানের কর্মী হেমন্ত খালকো এলাকায় মাশরুম কুড়োতে গিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম চিতাবাঘটিকে দেখে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন।

রেলের তরফে অবশ্য এ দিন বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, হাতি বা বড় আকারের কোনও প্রাণীর সঙ্গে কামরা বা ইঞ্জিনের ধাক্কা লাগে তা চালক বা গার্ডরা টের পান। কিন্তু অন্ধকারে চিতাবাঘের মতো ছোট প্রাণীর ক্ষেত্রে তা সাধারণত বোঝার উপায় থাকে না। তাও বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ছয় মাসে ওই এলাকায় এই নিয়ে তিনটি চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে নকশালবাড়ির ত্রিহানা চা বাগানে একটি ক্ষতবিক্ষত চিতাবাঘের দেহ মেলে। বুনো শুয়োরের দলের সঙ্গে লড়াইয়ে সেটির মৃত্যু হয়েছিল। এর পরে মেরিভিউ চা বাগানে দুটি চিতাবাঘের মধ্যে শিকার ধরা নিয়ে লড়াই হয়। তাতে একটি মারা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন