মৃত সেনা জওয়ানের দেহ ঘরে ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল গোটা গ্রাম। শুক্রবার দুপুরে সিকিমের চিন সীমান্ত থেকে ওই দেহ সড়কপথে মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভোটবাড়ির বাসিন্দা রবিউল ইসলাম (২৫) সাড়ে চার বছর আগে সেনা বাহিনীতে চাকরি পান। কিছু দিন থেকে তিনি সিকিমের চিন সীমান্তে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার সেখানে সিলিন্ডার ফেটে আগুন ধরে গেলে রবিউলের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। শোনার পর থেকে খারাপ লাগছে।”
চার ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রবিউল। এলাকায় ভাল ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ছোট থেকেই সেনায় চাকরি করার আগ্রহ ছিল তাঁর। সিকিমের সতেরো মাইলের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এ দিন ছেলের নিথর দেহ ঘরে ফিরতেই বাবা আমিরুদ্দিন মিয়াঁ, মা ওছিমা বিবি বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন প্রধান দধিরাম রায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “খুব খারাপ লাগছে। গোটা গ্রাম তাঁকে ওই জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।”
গ্রামের অনেক বাসিন্দাই অবশ্য রবিউলকে নিয়ে গর্ব করেন। তাঁরা বলেন, “দেশের পাহারায় থেকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এটা আমাদের কাছে খুব গর্বের।” তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, চলতি মাসেই তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তাঁর বিয়ের ব্যাপারেও আলোচনা চলছিল।
বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, সেনা জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানাতে কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক বা প্রশাসনের আধিকারিকেরা ছিলেন না। তাঁরা বলেন, “এটা আমাদের কাছে লজ্জার। অন্য কোথাও হলে এমনটা হতো না।” উপস্থিত সেনা জওয়ানেরা আক্ষেপ করেন, রাজস্থান, পঞ্জাব বা অন্য রাজ্য হলে জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানাতে নেতা-মন্ত্রীরা সবাই উপস্থিত থাকতেন। মেখলিগঞ্জের বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র বলেন, “খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি জানতে পেরেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।” প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “ওই জওয়ানের দেহ আসার পরে পুলিশ কর্তারা সেখানে গিয়েছিলেন।”