প্রতীকী ছবি।
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হল কোচবিহারে। সোমবার রাতে কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যাক্তির মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মৃতের নাম বিরাজ বর্মন (৪৫)। বাড়ি তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ে। ৯ অগস্ট থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে কোচবিহারে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল চার জনের। তাঁদের মধ্যে দু’জনের সিএসএফ পরীক্ষায় ‘জাপানি এনসেফ্যালাইটিস’-এর জীবাণু মিলেছে। বিরাজবাবুর অ্যাকুইট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোম ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তবে শারীরিক অবস্থা ভাল না থাকায় তার সিএসএফ পরীক্ষা সম্ভব হয়নি। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি এইএসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।’’
জেলায় জ্বরে আক্রান্ত রোগী মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের। সোমবারও পরিস্থিতি পর্যালোচনায় স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। এর পরে ফের একজনের মৃত্যুতে চিন্তা বেড়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পুরএলাকার সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
তবে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, উদ্যোগের কথা বলা হলেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে ন্যূনতম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের অনেকে মশারি পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। সর্বত্র জঞ্জাল, জমা জল সাফাইয়ের উদ্যোগ নেই। স্বাস্থ্য ও প্রশাসনের কর্তাদের অবশ্য বক্তব্য, ওই অভিযোগ ঠিক নয়। কাজ হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলা হাসপাতালে গড়ে ১০ জন রোগী গত কয়েকদিন থেকেই ভর্তি। তার উপরে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালেও রোগী রয়েছেন। নতুন করে মঙ্গলবার অবশ্য জেই আক্রান্তের হদিশ মেলেনি।
গত বুধবার তুফানগঞ্জের নাককটিগছের বাসিন্দা আখিমা বেওয়া (৬০) মারা যান। তাঁর সিএসএফ পরীক্ষায় জেই পজিটিভ মেলে। তুফানগঞ্জের চ্যাংমারির সহিদুল ইসলাম নামে আড়াই বছরের এক শিশুরও জেই পজিটিভ রয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার তুফানগঞ্জ হাসপাতালে মারা যান অসমের ধুবুরির বাসিন্দা সহিদুল মিয়া (১২)। শনিবার কোচবিহারে তুফানগঞ্জের অন্দরান ফুলবাড়ির লোকেশ্বর বর্মনের মৃত্যু হয়।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, জেই-র লক্ষণ রয়েছে এমন সন্দেহজনকদের সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ) পরীক্ষার ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে।