সুনসান: বুধবার এই স্কুলেই চলে গুলি। নিজস্ব চিত্র
স্কুলঘর খোলা। ঘরের ভিতরে লন্ডভন্ড অবস্থায় পড়ে রয়েছে চেয়ার-টেবিল। ছাত্রছাত্রীদের কেউ অবশ্য স্কুলে নেই। পাশেই গ্রামের ভিতরে আতঙ্কের ছায়া স্পষ্ট। ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে রয়েছে। তারা কেউই স্কুলে যেতে রাজি নয়। আতঙ্কে অভিভাবকেরাও। বৃহস্পতিবার এমনই চিত্র দেখা গেল গীতালদহের চাইলনদহ গ্রামে।
বুধবার সকাল ১০টায় তৃণমূলের গোষ্ঠী লড়াইয়ের জেরে ওই স্কুলের ভেতরে ঢুকে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। তাতে এক শিক্ষক-সহ দু’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, গন্ডগোলে যুক্ত থাকার অভিযোগে আমিনুল হক নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত তৃণমূল কর্মী নামে পরিচিত। দিনহাটার এসডিপিও উমেশ গণপত বলেন, “বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আতঙ্কের কোনও বিষয় নেই।”
তবে নিশ্চিন্ত নন এলাকাবাসী। স্কুলে হামলার সময় ক্লাসেই ছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মোহনা মনি সুলতানার, লিয়াকত আলিরা। স্কুল ঘেঁষেই তাঁদের বাড়ি। এ দিন তারা বলে, “আমাদের পরীক্ষা ছিল। সবাই পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। তার মধ্যেই মারামারি শুরু হয়ে গেল। আমরা ভয়ে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাই।” ওই গ্রামেই বাড়ি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিরর ছাত্রী রিফা সানজিদার। তাঁর কথায়, “খুব ভয় করছে। আবার যদি মারপিট হয়। তাই স্কুলে যাইনি।” ওই ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক লিলি বিবি, পারভিনা খাতুন, রাজ্জাক আলিরা বলেন, “আমাদেরই ভয় করছে। শিশুদের কী অবস্থা বুঝতেই পারছেন। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।”
বুধবার সকাল ১০ টা নাগাদ ওই স্কুলের শিক্ষক মজনু হক ও তাঁর ভাই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মনোয়ার হোসেনের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই ২ জন মূল তৃণমূলের রয়েছেন। সে কারণেই যুব তৃণমূলের নেতা তথা গীতালদহ-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আবুয়াল আজাদের নেতৃত্বে ওই হামলার অভিযোগ ওঠে। যদিও আবুয়াল আজাদ দাবি করেন, তাঁর ভাইপোকে রাস্তায় আটকে মারধর করে মজনুরা। তা নিয়েই বচসা হয়। গুলি চলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।