ফাইল চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছাড়তেই দক্ষিণ দিনাজপুরে ‘বড়সড়’ ভাঙনের আশঙ্কা করছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এই আশঙ্কার মাঝেই জেলার এক ঝাঁক তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘দাদা (শুভেন্দু) যে দিকে যাবে, আমরাও সে দিকে যাব।’’ সে সব নেতাদের উপরে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ‘কড়া’ নজর রাখছেন বলে জানা গিয়েছে।
কয়েক মাস আগে জেলার দুই কার্যকরী জেলা সভাপতি সোনা পাল ও দেবাশিস মজুমদারের সঙ্গে তৃণমূল নেতা সুনির্মলজ্যোতি বিশ্বাসকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরে তাঁরা এখন মুখ খুলছেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা বরাবরই শুভেন্দুর অনুগামী। শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। এখন ‘দাদার’ নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। শনিবার দেবাশিস বলেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগে দল থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। যদিও তাঁর আগেই দাদার নির্দেশে দলত্যাগ করেছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বালুরঘাট, হিলি থেকে কুশমণ্ডি, কুমারগঞ্জ ব্লকের একাধিক নেতা দাদার অনুগামী। সবাই দাদার নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। দাদা যদি নতুন দল গড়েন তা হলেও সঙ্গে, অন্য দলে যোগ দিলে সেখানেও আমরা যাব।’’ সুনির্মলের ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য মেলেনি। তবে এখনও তৃণমূলেই আছেন বলে এ দিন দাবি করেছেন সোনা। এ দিকে, দলীয় সূত্রে খবর, জেলার বিভিন্ন ব্লকের একাধিক জনপ্রতিনিধি থেকে দলের পদাধিকারী শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
ফলে শুভেন্দুর পরবর্তী রাজনৈতিক অবস্থানের উপরে জেলা তৃণমূলে কতটা ভাঙন হবে তা নির্ভর করছে। জেলা নেতৃত্বও তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। কারণ, প্রায় প্রতিটি ব্লকেই নতুন ব্লক ও অঞ্চল কমিটি গঠন নিয়ে কোন্দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেক নেতাই নতুন ব্লক কমিটি ও অঞ্চল কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে অসন্তুষ্ট। তাঁদের বক্তব্য, যে ভাবে দল পরিচালনা করা হচ্ছে তাতে সংগঠন মজবুত হবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃণমূলের এক সদস্য এ দিন বলেন, ‘‘দলে কোনও কিছুই বলা যায় না। বললেও শোনার কেউ নেই। ঠিকাদার থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ নেতার আসনে বসে রয়েছে। এ ভাবে দল চলে না।’’ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে দলের একটা অংশ যে শুভেন্দুর দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন তা মানছেন জেলা সভাপতি গৌতম দাস। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছেও এমন খবর এসেছে। অনেকেই যোগাযোগ রাখছেন বলে শুনছি। যাঁরা বহিষ্কৃত তাঁদের স্বাধীনতা আছে। তবে যাঁরা দলের পদে থেকে অন্য কিছু ভাবছেন তাঁদের উপরে নজরদারি চলছে। এ সব করলে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’’