মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য অন্তর্বিভাগ চালু থাকলেও এক জনও রোগী নেই। হাসপাতালের রেকর্ড বিভাগের করুণ অবস্থা। সেখানে বিভিন্ন রোগের সম্পর্কে নথি যথাযথ ভাবে রাখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ইন্টারকম ব্যবস্থা নেই। পড়ুয়াদের জন্য যে ‘ডেমোনস্ট্রেশন রুম’ থাকার কথা তাও খুবই ছোট।
গত চার বছর ধরে ১৫০ আসনের অনুমোদনের জন্য এই সব পরিকাঠামো ঠিক করার কথা বারবার বলে আসছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)। অথচ বৃহস্পতিবারও পরিদর্শনে এসে ওই সমস্ত খামতি চোখে পড়ছে এমসিআই এর প্রতিনিধি দলের। তাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমবিবিএস কোর্সে ওই সংখ্যক আসনে ভর্তির অনুমোদনের বিষয়টি ফের ঝুলে থাকার আশঙ্কা থাকছেই। তার উপর চিকিৎসক, অধ্যাপকদের অনেকেই না আসায় অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, কমিউনিটি মেডিসিনের মতো বিভাগগুলিতে এ দিন ২৫ শতাংশেরও বেশি শিক্ষক-অধ্যাপক খামতি রয়েছে বলে নথিভুক্ত হয়েছে। রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মেডিসিন ও শল্য বিভাগের মতো যে বিভাগগুলির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে সেখানেও ১০ শতাংশের বেশি শিক্ষক-অধ্যাপক কম ছিল এ দিন। তাতে ১৫০ আসনের অনুমোদন পেতে কর্তৃপক্ষের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। হাসপাতালের সুপার ‘ফেইমার ফেলোশিপ’-এ লুধিয়ানায় গিয়েছিলেন। এ দিন দুপুরে ফিরলেও অসুস্থতার জন্য অফিসে যেতে পারেননি তিনি। অনুপস্থিত হিসাবে তাঁকেও সিনিয়র শিক্ষক-অধ্যাপকের হিসেবে ধরতে চায়নি এমসিআই।
এ দিন যে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন, তাঁরা হলেন, কো-অর্ডিনেটর রাম অবধ সিংহ কুশওয়াহা, শচীন্দ্র কুমার শ্রীবাস্তব এবং এমপি সুধাংশু। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, ‘‘নার্সিং স্টাফ ও প্যারামেডিক্যাল স্টাফ কম থাকা, প্রদর্শনী কক্ষ, পরীক্ষা হল, লেকচার থিয়েটারের পরিকাঠামো নিয়ে সে সমস্ত খামতি ছিল তা ঠিক করা হয়েছে। প্রতিনিধি দল দেখে রিপোর্ট দেবেন। সেই মতো ব্যবস্থা হবে।’’
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে ১৫০ আসনে ছাত্র ভর্তি নেওয়া শুরু হয়। সে সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপযুক্ত হস্টেল, ওয়াইফাই ব্যবস্থা না-থাকা, শিক্ষক-অধ্যাপক কম থাকার মতো বহু খামতির কথা জানানো হয়। সে গুলির একাংশ পূরণ হলেও এখনও অনেক খামতি রয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে দেড়শো আসনের অনুমোদন না মিললে যাঁরা পাশ করে বার হবেন তারা শংসাপত্র পাবেন না। শংসাপত্র পেতে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকতে হবে তাঁদের।