মুহুরিপাড়ার এক টুকরো মণিপুর

রাজ্যের গণ্ডিতেই আবদ্ধ থাকা নয়, জেনে নেওয়া ভিন্‌ রাজ্যের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার। সেই মানসিকতা নিয়ে প্রতি বছর পুজো করে চলেছে জলপাইগুড়ির মুহুরিপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৩
Share:

রাজ্যের গণ্ডিতেই আবদ্ধ থাকা নয়, জেনে নেওয়া ভিন্‌ রাজ্যের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার। সেই মানসিকতা নিয়ে প্রতি বছর পুজো করে চলেছে জলপাইগুড়ির মুহুরিপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি।

Advertisement

প্রতি বছরই এদের পুজোয় উঠে আসে দেশের নানা রাজ্যের ছবি। গতবার এদের বিষয় ছিল দক্ষিণের কেরলের সংস্কৃতি, তার আগে বাংলার বাউল, তার আগে পুরুলিয়ার ছৌ এবং তারও আগে রাজস্থানের কাঠপুতলি। এ বার তাদের বিষয় মণিপুর। মণিপুরের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ।

মুহুরিপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির সম্পাদক উত্তম বসু বলেন, “আমাদের উপলক্ষ রাজ্য অথবা অন্য রাজ্যের শিল্প সংস্কৃতি তুলে ধরা। এ বারে মণিপুর। মণিপুরের বৈষ্ণব সংস্কৃতির সঙ্গে উপজাতিদের সংস্কৃতির কিছু কিছু বিষয় নিয়ে এ বারের মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে।”

Advertisement

শুধু মণ্ডপই নয়, প্রতিমাও থাকবে তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই। দেবী দুর্গার মূর্তিও তৈরি হবে মণিপুরে পূজিত রাধাকৃষ্ণের রাধার আদলে। মাটির প্রতিমাটি তৈরি করছেন স্থানীয় একজন শিল্পী। তবে মণ্ডপ এবং মূর্তির পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে মণিপুর থেকে আসছেন একজন শিল্পী। কেমন হবে মনিপুরের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মণ্ডপ? উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, মণিপুরে যেমন বৈষ্ণব ধর্ম আছে তেমনই উপজাতিও আছে অনেক। মণিপুরের দক্ষিণ অংশে যেমন ‘মেইতেই’ এবং ‘পঙ্গল’ উপজাতি বাস করে তেমনই উত্তরের পাহাড়ি অংশে ‘নাগা’ এবং ‘কুকি’ উপজাতির বাস। এ ছাড়াও সারা মণিপুর জুড়ে আছে চারটি মূল উপজাতির আরও ২৯টি শাখাপ্রশাখা। এদের ধর্ম এবং সংস্কৃতির মধ্যে বৈচিত্র্য আছে।

যেমন কেউ মানত করলে একটা লম্বা বাঁশের পাশে ছোট ছোট গোলাকৃতি অংশ কাপড় দিয়ে মুড়ে মন্দিরে রেখে আসেন। সেই গোলাকৃতি অংশের মোট সংখ্যা অবশ্যই বিজোড় হতে হবে। এ ছাড়াও আছে ছোট দুটি ড্রাগনের মূর্তি, যা অনেক উপজাতির বাড়িতে সাজানো থাকে। আর আছে বাদ্যযন্ত্র পুনচালন এবং মণিপুরী পুতুল— এই চারের মিশেলেই এখন তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপের একটি অংশে একশোটি মানতের লম্বা বাঁশের কাঠামো থাকবে। পঞ্চাশটা মণিপুরী বাদ্যযন্ত্র পুনচালন থাকবে। আর থাকবে দুশোটি মণিপুরী পুতুল।

মূর্তিও হবে মণিপুরী ধাঁচে। রাধার আদলে দুর্গা। মণিপুরে রাধা যে পোশাক পরে পূজিত হন সেরকম পোশাক। মণিপুরের প্রথা মেনে সমস্ত মণ্ডপে সবকিছুই তৈরি হচ্ছে বাঁশ দিয়ে। পুজোর সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে মণিপুর থেকে আসছেন দশ জনের একটি দল। তাঁরা পুজোর চারদিন মণ্ডপ সংলগ্ন প্রাঙ্গনে সন্ধ্যায় মণিপুরী নৃত্য পরিবেশন করবেন। সব মিলিয়ে চারদিন একটি জমজমাট উপস্থাপনা দেখার আশায় শহরবাসী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement