ফোন রুখতে পথ কী, প্রশ্ন

মাধ্যমিকে পরপর প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। তখন যাতে একই সমস্যায় পড়তে না হয়, সে জন্য এর মধ্যেই একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে শিক্ষা দফতর।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৩
Share:

মাধ্যমিকে পরপর প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু। তখন যাতে একই সমস্যায় পড়তে না হয়, সে জন্য এর মধ্যেই একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে শিক্ষা দফতর। বৃহস্পতিবারও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রশাসনের কর্তারা। তবে শিক্ষকদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন ঢোকা কী ভাবে আটকানো সম্ভব, সেটাই আসল চিন্তার। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল রুখতে বজ্র আঁটুনিতে একাধিক ফস্কা গেরোর সন্ধানও পেয়েছেন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ।

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ডিটেক্টর বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সব পরীক্ষাকেন্দ্রে এই ডিটেক্টর থাকার কথা নয়। কয়েকটি এলাকার জন্য এক বা একাধিক ডিটেক্টর থাকবে। সেগুলিই বিভিন্ন সময় প্রয়োজন অনুসারে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানা পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে। শিক্ষকদের একাংশের মতে, এর ফলে শুরুতেই ধাক্কা খাবে মোবাইল রোখার প্রচেষ্টা। শিলিগুড়ির এক প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, প্রশাসনিক বৈঠকে তাঁদের মৌখিকভাবে বলা হয়েছে শুধু ছাত্রদের তল্লাশির ক্ষেত্রেই মোবাইল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হবে। ছাত্রী, শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার হবে না বলেই ওই প্রধান শিক্ষকের দাবি। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা তাঁদের মোবাইল প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা রাখবেন। কে, কখন, ক’টা মোবাইল জমা দিল, আর কখন তা ফেরত নিল, সেগুলি প্রধান শিক্ষককে একটি রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করতে হবে। শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, ছাত্রীরা মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকবে না, এর কি কোনও নিশ্চয়তা আছে? আবার শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা যদি একাধিক মোবাইল নিয়ে ঢুকে একটি মোবাইল জমা করে অন্যটি সঙ্গে রাখেন, তার দায় কে নেবে? উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকেই এই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এর কোনও উত্তর দেননি সংসদ কর্তারা।

নকশালবাড়ির এক প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি তাতে, পরীক্ষকদের পক্ষে কোনও ছাত্র বা ছাত্রীদের তল্লাশি করা বাস্তবে সম্ভব নয়। আর প্রধান শিক্ষকের পক্ষেও সহ-শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীর তল্লাশি নেওয়া সম্ভব হবে না। তখন গোলমাল বাঁধতে পারে, যার দায় এসে পড়বে যিনি তল্লাশি করছেন, তাঁর উপরে। তাঁর শাস্তিও হতে পারে। তাই ওই দায়িত্ব নিতে সকলেই নারাজ।’’ শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কাউকে তল্লাশি করা যেতে পরে। তবে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিযুক্তের মতো আচরণ করা যায় না। তাই নজরদারি চালালেও তল্লাশি নিয়ে সে ভাবে হবে না।’’

Advertisement

তা হলে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল আটকানোর পথ কী, সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন