ইদ ও রথ একই দিনে পাড়ায় দিনভর ব্যস্ত থাকলেন শিলিগুড়ি পুলিশ ও তাঁদের কর্তারা। কখনও ভিড় সামলাতে নাজেহাল, আবার কখনও ছোটখাট ঝামেলা মেটাতে ছুটে বেড়াতে হয়েছে। সারাদিনই শহরের অন্তত পঞ্চাশ জায়গায় রথের মেলা ও ইদ উপলক্ষে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যে দুপুরে একটি নার্সিংহোমের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে হাসমিচকে অবরোধ করেন রোগীর বাড়ির আত্মীয়রা। উৎসবের দিনে এমনিতেই বাহিনী অমিল, তার উপরে দিনের বেলা শহরের কেন্দ্র আটকে যাওয়ায় তা সামলাতে নাজেহাল হতে হয় পুলিশকে। অবরোধ ওঠাতে যেতে হয় এসিপি (পূর্ব), শিলিগুড়ি থানার আইসি সহ থানা থেকে বিশাল বাহিনীকে।
শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) অংমু গ্যামসো পাল বলেন, ‘‘একই দিনে দুটি বড় উৎসব পড়ে যাওয়াতে বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে সমস্যা তৈরি হতে না পারে তাই বিভিন্ন এলাকায় থানার পাশাপাশি রিজার্ভ বাহিনীকেও কাজে লাগানো হয়েছে।’’
শিলিগুড়ির বড় রথগুলোর মধ্যে শিলিগুড়ি থানা এলাকায় শহরের সবচেয়ে পুরোনো রথের মেলা হয় রথখোলায়। এ ছাড়া বিধান মার্কেটের মেলা, আশ্রমপাড়ার পাকুড়তলা মোড় এলাকায় নতুন একটি মেলা আয়োজন হচ্ছে। ভক্তিনগর এলাকার হায়দরপাড়ায় ইস্কন মন্দিরের বিশাল রথের মেলা সামলাতে প্রতিবারই হিমশিম অবস্থা হয়, মেলার পাশাপাশি মন্দির ও বিগ্রহ দর্শনে বাড়তি উৎসাহ থাকে মানুষের মধ্যে। এবারও দুপুর থেকেই মন্দিরে ছিল ভিড়। রাত ১০ টা পর্যন্ত ভিড় সামলাতে হয়েছে পুলিশকে। নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ি এলাকার শক্তিগড়ে শহরের সবচেয়ে বড় রথের মেলা আয়োজন হয় গৌড়ীয় মঠে। গোটা ফাঁড়ির পুলিশই এই দিন এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিযুক্ত ছিল। এই এলাকায় রথ হয় তিনবাত্তি ওভারব্রিজ ও গেটবাজার এলাকাতেও। তবে তা আকারে বড় নয়। নিউ জলপাইগুড়ি ভক্তিনগর এলাকায় একটি রথের আয়োজন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া শিবমন্দির, বাডডোগরা, মাটিগাড়ার খাপরাইল মোড় এলাকাতেও একাধিক রথের আয়োজন হয়েছিল।
শহরে ইদগাহগুলোতে ঈদের নমাজের জন্য একাধিক জায়গায় মিলন উৎসবের আয়োজন হয়েছিল। সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের ময়দান চত্বরে নমাজের আয়োজন করা হয়। এছাড়া হিলকার্ট রোড লাগোয়া এলাকায় কারবালা মসজিদের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় নমাজের। এছাড়া বর্ধমান রোডে বড় মসজিদ, ছোট মসজিদ, কারবালা মসজিদ, জামা মসজিদে ঈদের নমাজের আয়োজন করা হয়েছিল। সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন রথ সাজিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয় বিভিন্ন রাস্তায়। শহর লাগোয়া বিভিন্ন জায়গাতেও নমাজের আয়োজন করা হয়। কোথাও অশান্তি হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই সমস্ত এলাকায় ছোট বাহিনীতে ভাগ করে পুলিশকে কাজে লাগানো হয়েছিল। টহলদারি ভ্যানও ছিল। তার মাঝেই অনেকে অভিযোগ করেছেন, ১০০ ডায়ালে ফোন করে বেশির ভাগ সময়েই পাওয়া যায়নি। যদিও পুলিশের দাবি, সব সময়ই পুলিশকর্মীরা ফোন ধরেছেন। একসঙ্গে অনেকে চেষ্টা করায় হয়ত লাইন পাওয়া যায়নি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে পুলিশ ছিল সারাদিনই। বেশ কয়েকটি রাস্তা দিয়ে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হলেও, শহরের প্রধান রাস্তাগুলো খোলাই ছিল।