হাতির মৃত্যুর পরে সতর্কতা এলাকা জুড়ে

এক মাসের মধ্যে একই এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় পর পর তিনটি হাতির মৃত্যু ঘটনায় উদ্বেগে বন দফতর

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৭:৫০
Share:

মৃত: হাতির দেহ। নিজস্ব চিত্র

এক মাসের মধ্যে একই এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় পর পর তিনটি হাতির মৃত্যু ঘটনায় উদ্বেগে বন দফতর। শুক্রবার রাত থেকে গোটা এলাকা জুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়ানো হয়েছে বনকর্মীর সংখ্যা। কিছু গাড়িও আনা হয়েছে বিন্নাগুড়ি রেঞ্জে। এ ছাড়া হাতি তাড়াতে বা আহত হাতি উদ্ধারে বিশেষভাবে পটু বন দফতরের গাড়ি ‘ঐরাবত’কে মালবাজার থেকে বিন্নাগুড়িতে আনা হয়েছে।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে সরুগাঁও, মোগলকাটা, দুরামারি, বিন্নাগুড়ি, কলাবাড়ি গয়েরকাটার বিভিন্ন চা বাগান ও বনবস্তি এলাকায় দফায় দফায় হাতির পাল ঢোকে। যদিও হাতির কারণে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, তবে এই ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। মোগলকাটার বাসিন্দা সুখী ওরাওঁ, বুলু মুর্মুরা বলেন, ‘‘রাতে হাতির চিৎকারে ভয়ে দু-চোখের পাতা এক করতে পারিনি। মনে হয়, চোখের সামনে সঙ্গীদের ট্রেনে কাটা পড়তে দেখে হাতিরাও ভয় পেয়েছে।’’

বিন্নাগুড়ির কয়েকজন বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় ঢুকে পড়া হাতির পালে আহত হাতিও ছিল। তবে সেটি ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার কি না, তা জানেন না তাঁরা। জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণ শাখার ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে সাত থেকে আটটি হাতি লাইন পার হওয়ার সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। মা-সহ একটি শাবক হাতি মারা গেলেও ওই দুর্ঘটনায় আর কোনও হাতি আহত হয়নি। তবে বন দফতর হাতির দলগুলির গতিবিধির উপর বিশেষ নজর রাখছে।’’

Advertisement

বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জার জলধর রায় বলেন, ‘‘বিন্নাগুড়ি রেঞ্জ অনেক বড়। শুক্রবার রাতে দশ-বারোটি জায়গায় হাতি বেরোনোর খবর আসে। কর্মী ও গাড়ি কম থাকায় কোন জায়গা ছেড়ে কোথায় যাব দিশা পাচ্ছিলাম না।’’

বন দফতর জানায়, শুক্রবার সকালে দুর্ঘটনার পর হাতির দলটি ডায়না রেঞ্জের দিকে চলে যায় এবং পরে অন্য একটি দলের সঙ্গে মিশে যায়। সেই কারণে নির্দিষ্ট করে ওই দলটির গতিবিধি জানা যাচ্ছে না। জলপাইগুড়ির ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে রেতি জঙ্গল থেকে একশোটি হাতি ঢুকেছে। ওই দলটির তিন সদস্য ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে। এ দিকে মোরাঘাট জঙ্গলেও আগের থেকে এক'শোটি হাতির দল রয়েছে। ফলে এত বড় হাতির দল সামলাতে কালঘাম ছুটছে বনকর্মীদের।’’

এ দিন দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে দিনের বেলাতেও ট্রেনের গতি কম রাখা হয়েছিল ডুয়ার্সের রেললাইনগুলিতে। তবে পরিবেশপ্রেমীদের বক্তব্য, যে কোনও ঘটনার পর কিছুদিন ট্রেন ধীরে চলে ঠিকই। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে আবার গতি বাড়ে রেলের। তার জেরেই ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু থামানো যাচ্ছে না বলে দাবি তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন