দুর্ভোগ: নকশালবাড়ি স্টেশনে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে ছিল দার্জিলিং মেল। নিজস্ব চিত্র
নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ৮টা। ট্রেন স্টেশনে এসে দাঁড়াল বেলা ২টো ৩০ মিনিটে। ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় বুধবার প্রায় সাড়ে ছ’ঘণ্টা দেরিতে এনজেপি স্টেশনে পৌঁছল আপ দার্জিলিং মেল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত্রি ১০টা ৫ মিনিটে নির্দিষ্ট সময়েই শিয়ালদহ থেকে রওনা হয়েছিল ট্রেনটি। সকাল ১০টা নাগাদ নকশালবাড়ি স্টেশনে ঢোকার মুখে হঠাৎ ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ফলে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন চালক। ঘণ্টাখানেক চেষ্টার পরেও ইঞ্জিন চালু না হওয়ায় খবর যায় নিউ জলপাইগুড়িতে। বেলা ১টা নাগাদ শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে একটি বিকল্প ইঞ্জিন নকশালবাড়ি পৌঁছয়। তার পর সেখান থেকে রওনা হয় ট্রেনটি। বেলা ২টো নাগাদ ট্রেন পৌঁছয় শিলিগুড়ি জংশনে। আড়াইটে নাগাদ ট্রেন ঢোকে এনজেপিতে। ফলে এ দিন চরম ভোগান্তিতে পরেন যাত্রী ও পর্যটকরা। ট্রেন দেরিতে পৌঁছনোয় বহু পর্যটককে এ দিন পাহাড় ও ডুয়ার্সে যাওয়ার জন্য বাড়তি টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হয়। দুপুরে শেয়ারের গাড়ি কম থাকায় অনেকেই এ দিন পাহাড়ে উঠতেই পারেননি।
রুট ঘুরিয়ে দেওয়ায় কিছু দিন ধরে বাতাসি, নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি জংশন হয়ে এনজেপি ঢুকছে দার্জিলিং মেল। ফলে এমনিতেই প্রায় রোজ ট্রেন ‘লেটের’ অভিযোগ উঠছে। আর কত দিন ঘুরপথে ট্রেন চলবে, তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না রেল কর্তারাও। তবে দার্জিলিং মেলের মতো একটি সুপারফাস্ট ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।
রেলের কাটিহার ডিভিশনের এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘সবটাই যান্ত্রিক কারণে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারও কিছু করার নেই। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিকল্প ইঞ্জিনের ব্যবস্থা করে ট্রেনটিকে গন্তব্যে নিয়ে এসেছি।’’ নকশালবাড়ি স্টেশনে ঢোকার মুখে রাজ্য সড়কের উপর দিয়েই গিয়েছে রেল লাইন। এশিয়ান হাইওয়ে-২ এর বিকল্প হিসেবে নকশালবাড়ি বাজার হয়ে পানিট্যাঙ্কি, খড়িবাড়ি যাওয়ার প্রধান ভরসা ওই রাজ্য সড়ক। রাস্তার উপর তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ট্রেন দাড়িয়ে থাকায় ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়।
সল্টলেকের বাসিন্দা সুকন্যা গুহ এ দিন পরিবার নিয়ে দার্জিলিং মেলে আসছিলেন। শিলিগুড়িতে নেমে তাদের দার্জিলিং যাওয়ার কথা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকে গাড়ি বুক করে রেখেছিলাম। দেরি হওয়ায় অন্য ভাড়া পেয়ে চালক চলে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া দিয়ে ফের গাড়ি নিতে হয়েছে।’’ শিলিগুড়ির বউবাজারের বাসিন্দা সুমন সাহাও ট্রেনে ছিলেন। দেরি হওয়ায় তিনি নকশালবাড়িতে নেমে বাস ধরে বাড়ি চলে আসেন। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার আট জনের একটি দলের সিকিম ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। দেরিতে পৌঁছনোয় তাঁরা শেয়ারের গাড়ি পাননি। ফলে শিলিগুড়িতেই থাকতে হয়েছে তাঁদের। দলের সদস্য কৌস্তভ রায় বলেন, ‘‘দেরি হওয়ায় দিনটাই মাটি। গাড়িও বেশি ভাড়া চাইছে। তাই কাল সকালেই যাব।’’