রবিবার ছুটির দিন। জ্বরের প্রকোপ রুখতে এ দিনও খোলা ইংরেজবাজার পুরসভা। নিজস্ব চিত্র
ছুটির দিনও পুরসভায় কাজ করছেন কর্মী, আধিকারিকরা। এমনকী, পুরসভায় বসে রয়েছেন পুরপ্রধান, উপ পুরপ্রধানও। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বোর্ড ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি শুনে কার্যত গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছেন মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তাই শনিবার ছুটির দিনেও অন্যান্য দিনের মতোই চলল পুরসভার কাজকর্ম। এমনকী, আজ রবিবারও অফিস খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ। তিনি বলেন, “পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মী, সাফাই কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জ্বরের প্রকোপ থাকায় আপাতত ছুটির দিনেও পুরসভাও খোলা রাখা হয়েছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার শহরের ২৯টি ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ জন। শহরের ঘরে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা রয়েছেন। শুধু তাই নয়, ইংরেজবাজার শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুড়াবুড়িতলায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রের। এমনকী, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন খোদ উপ পুরপ্রধান দুলাল সরকারও। চার দিন তিনি শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভার প্রতি ক্ষোভ বাড়ছিল শহরবাসীর। অভিযোগ, কীটনাশক তেল স্প্রে করা থেকে শুরু করে ব্লিচিং কিছুই ছড়ানো হয়নি। মশা বাহিত রোগের সংখ্যা বাড়ছিলই।
ইংরেজবাজার পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাও। কলকাতায় তিনি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন কাজ না করলে ভেঙে দেওয়া হবে পুরবোর্ড। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে হুঁশিয়ারি শুনে ঘুম ছুটে যায় তৃণমূল পরিচালিত ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষের। তারপর থেকেই ডেঙ্গি রোধে তৎপর হন তাঁরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনে দু’বার করে স্বাস্থ্য দফতর ও কর্মীদের নিয়ে নিয়ম করে বৈঠক করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে দিনে দু’বার করে কীটনাশক তেল স্প্রে করা হচ্ছে। ওয়ার্ড পিছু ৪০ লিটার করে তেল বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া ব্লিচিং পাউডার, মশা মারতে কামান দাগা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করে স্বাস্থ্য কর্মী, সাফাই কর্মীদের ছুটি বাতিল করে দিয়েছে পুরসভা। এমনকী, ছুটির দিনেও খোলা রাখা হচ্ছে পুরসভা। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, পুরসভা আগে থেকে কাজ করলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে পারত। উপ পুরপ্রধান দুলাল সরকার বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে কাঁচা নর্দমা পাকা হচ্ছে। ওয়ার্ডে যাতে জল না জমে তার জন্য নিকাশি নালা চওড়া করা হয়েছে।” দিনে দু’বার আবর্জনার গাড়ি ঘুরছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।