পর্যবেক্ষককে সব কথা বলতে চান বহিষ্কৃতেরা

পুর ভোটের প্রচারে আজ, শুক্রবার জলপাইগুড়িতে আসতে পারেন প্রদেশ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক অপর্ণা নিয়োগী। দলের একাংশের অনুমান, দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সদ্য বহিষ্কৃত মহিলা নেত্রী সাগরিকা সেন সহ পাঁচজন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। প্রদেশ নেত্রী বহিষ্কৃতদের সঙ্গে দেখা করেন কি না তা নিয়ে তৃণমূল মহলে জোর জল্পনা দেখা দিয়েছে। যদিও ওই বিষয়ে জেলা নেতৃত্বের কেউ মুখ খুলছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৫
Share:

প্রচারে বেরিয়ে পায়ে চোট সাগরিকা সেনের। শুশ্রূষা মেয়ের। সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

পুর ভোটের প্রচারে আজ, শুক্রবার জলপাইগুড়িতে আসতে পারেন প্রদেশ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক অপর্ণা নিয়োগী। দলের একাংশের অনুমান, দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সদ্য বহিষ্কৃত মহিলা নেত্রী সাগরিকা সেন সহ পাঁচজন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। প্রদেশ নেত্রী বহিষ্কৃতদের সঙ্গে দেখা করেন কি না তা নিয়ে তৃণমূল মহলে জোর জল্পনা দেখা দিয়েছে। যদিও ওই বিষয়ে জেলা নেতৃত্বের কেউ মুখ খুলছেন না।

Advertisement

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারে যোগ দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি, ধারাবাহিক ভাবে গোলমাল পাকানো-সহ বিভিন্ন অপরাধে গত ৭ এপ্রিল সাত জনকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বহিষ্কৃতদের মধ্যে আছেন তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের প্রদেশ কমিটির সদস্য তথা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বোর্ড সদস্য সাগরিকা সেন, অপর্ণা ভট্টাচার্য, দীপা ঘোষ, কৃষ্ণা দত্ত, মিনা বণিক, সদন ছেত্রি এবং স্বপন সরকার। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এক রকম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন সাগরিকা সহ অন্য মহিলা কর্মীরা। সিদ্ধান্ত মানছেন না হুমকি দিয়ে তাঁরা জানান, শুক্রবার প্রদেশ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক জলপাইগুড়িতে আসবেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে ‘অবিচারের’ কথা তুলে ধরা হবে।

বৃহস্পতিবার সাগরিকা বলেন, “টেলিফোনে প্রদেশ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক অপর্ণা নিয়োগীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন শুক্রবার ভোটের প্রচারে জলপাইগুড়িতে আসবেন। ঠিক করেছি ওই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমস্ত ঘটনা খুলে বলব।”

Advertisement

কিন্তু অপর্ণা দেবী এলে বহিষ্কৃতরা দেখা করার সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এমনকী দলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের মুখে অস্বস্তি এড়াতে শেষ মুহূর্তে প্রদেশ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষকের সফর সূচির পরিবর্তন করে ১৮ এপ্রিল করা হতে পারে। যদিও সাগরিকার দাবি, “উনি আমাকে নিজেই বলেছেন শুক্রবার যাচ্ছি। এর পরে না এলে কি করার আছে! তিনি যেদিন আসুন দেখা করার চেষ্টা করব।” জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ওই বিষয়ে মুখ খোলেননি। কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী ফোন ধরেননি। ওই পরিস্থিতিতে জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে।

এমনিতে বহিষ্কারের বারো ঘণ্টার মধ্যে গত বুধবার সাগরিকা সহ পাঁচ মহিলা তৃণমূল কর্মী দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নেমে নতুন করে জেলা নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেন। ওই প্রচার অভিযান নিয়ে দলীয় স্তরে বিস্তর আলোচনা হয়। কর্মী মহলে প্রশ্ন ওঠে বহিষ্কৃতেরা এভাবে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করতে পারেন কিনা! খবর পৌঁছয় প্রদেশে।

প্রদেশ নেতৃত্ব বিতর্ক না বাড়িয়ে জানিয়ে দেন দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে কেউ প্রচারে নামলে সব সময় স্বাগত। অবশেষে সেভাবে দলের জেলা সভাপতিও জানিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার অসুস্থ থাকায় সাগরিকা প্রচারে না বের হলেও ২ নম্বর ওয়ার্ডে দীপা ঘোষ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মিনা বণিক, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে কৃষ্ণা দত্তরা দলবল নিয়ে প্রচার চালিয়ে যান। এদিন কোন বিতর্ক না হলেও জেলা নেতৃত্বের মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে কোন প্রদেশ মহিলা নেত্রী প্রচারে এলে দেখা করার সুযোগ না দেওয়া হলে কোন ভূমিকা নেন বহিষ্কৃতরা। অন্যদিকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলে তাঁরা কি বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন