‘ভুয়ো’ হলফনামায় ভোটে, বিতর্ক

তৃণমূলের ওই নেতার নাম মির মহিরুদ্দিন। তিনি তৃণমূলের কোচবিহার শহর সংলগ্ন টাকাগছ অঞ্চলের সভাপতি। খুনের মামলায় এমন একজন ফেরার কী করে হলফনামা জমা দিলেন, তা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা কোচবিহারে। অভিযোগ উঠেছে, আসলে তিনি প্রকাশ্যেই ঘুরতেন, পুলিশ দেখেও দেখেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৮ ০২:১১
Share:

অভিযুক্ত: তৃণমূল নেতা মির মহিরুদ্দিন। নিজস্ব চিত্র

খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পুলিশের খাতায় প্রায় এক বছর ধরে তিনি ফেরার। তার পরেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে হলফনামা জমা দিয়েছেন তিনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীও হয়েছেন। সবই চলছিল গোপনে। আচমকাই রাতের অন্ধকারে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের অফিসের সামনে টাঙিয়ে দেওয়া দুটি ফ্লেক্সে সব ঘটনা প্রকাশ্যে চলে এল। সৌজন্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

Advertisement

তৃণমূলের ওই নেতার নাম মির মহিরুদ্দিন। তিনি তৃণমূলের কোচবিহার শহর সংলগ্ন টাকাগছ অঞ্চলের সভাপতি। খুনের মামলায় এমন একজন ফেরার কী করে হলফনামা জমা দিলেন, তা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা কোচবিহারে। অভিযোগ উঠেছে, আসলে তিনি প্রকাশ্যেই ঘুরতেন, পুলিশ দেখেও দেখেনি।

কোচবিহারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কলেজ ছাত্র মাজিদ আনসারি। ওই খুনে অভিযুক্তদের ছবি দিয়ে ফ্লেক্স তৈরি করে গোটা শহরে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময়ই সাগর দিঘি পাড়ে মহিরুদ্দিনের ছবি সহ ফ্লেক্স টাঙিয়ে ওই অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগ, মাজিদ খুনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ধৃত মূন্না খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে মীর মহিরুদ্দিনের। দলের একটি অংশই ওই ফ্লেক্স টাঙিয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Advertisement

কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “কেউ তথ্য গোপন করে হলফনামা জমা দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আইন রয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “মহিরুদ্দিন ফেরার। তল্লাশি চলছে। তার পরেও কীভাবে তিনি হলফনামা জমা দিলেন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে দলও। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মামলার বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছরের ১৫ জুলাই নিজের বাড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন মাংস বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম। ঘটনায় নাম জড়ায় মহিরুদ্দিনের। সেই সময় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা তাঁর বাড়ির উপরেও চড়াও হয়। তখন থেকে তিনি ফেরার। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, মহিরুদ্দিন এলাকায় রীতিমতো ‘দাদাগিরি’ চালাতেন। রফিকুলের কাছ থেকে তোলা আদায় নিয়ে মহিরুদ্দিনের ঘনিষ্ঠ কিছু যুবকের বচসা হয়। তার পরেই খুন হন রফিকুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন