ভূমিকম্পের আতঙ্ক। ময়নাগুড়ির স্কুলে ইউনিট টেস্ট চলাকালীন উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
মাল বোঝাই ট্রাক স্কুলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সামান্য কেঁপে ওঠে স্কুল। তাতেই ভূমিকম্পের আতঙ্ক ছড়িয়ে যাওয়ায় দোতলা থেকে নামতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হল প্রায় ২৫ জন ছাত্রী। সোমবার দুপুরে করণদিঘি থানার রহতপুর হাই মাদ্রাসাতে ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন সকালে করণদিঘির রহতপুর হাইমাদ্রাসায় ছাত্রীদের পরীক্ষা চলছিল। সেই সময়ে হঠাৎ স্কুলের পাশ দিয়ে ট্রাক চলে যাওয়ায় স্কুল ভবনটি কেঁপে ওঠে। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী চিৎকার করে উঠলে বাকি ছাত্রীরা ভয়ে পালাতে থাকে। হুড়মুড়িয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হয় স্কুলের প্রায় ২৫ জন ছাত্রী। তাদের আহত অবস্থায় করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে তিন জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
করণদিঘির বিডিও শম্ভুদ্বীপ সরকার বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। রাস্তার পাশের ওই স্কুলটি গাড়ি চলার কারণে কেঁপে ওঠায় পড়ুয়ারা ভূমিকম্প বলে দৌড়ে নামতে গিয়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। আহতদের করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হলে প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ৩ জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাদের রায়গঞ্জে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
স্কুল সূত্রে খবর, এ দিন রহতপুর হাই মাদ্রাসার ওই স্কুলে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বাংলা ও ইরেজি পরীক্ষা চলছিল। ছাত্রীরা স্কুলে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছিল। একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলের ল্যাবটরিতে ছিল। স্কুলটি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও দোমহনা সেতুর পাশে হওয়ায় রাস্তা দিয়ে কোনও বড় গা়ড়ি গেলেই স্কুল ভবনটি কেঁপে ওঠে।
এ দিনও স্কুলের পাশ দিয়ে একটি ট্রাক চলায় স্কুলের রাস্তার দিকের ভবনটি কেঁপে ওঠে। যদিও ওই ঘটনার পর ৪ দিনের জন্য স্কুলে ছুটি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রহতপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘‘সকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীরা বলছিল এ দিন ফের ভূমিকম্প হবে। তবে তা শুনে মাইকে পড়ুয়াদের সচেতন করে দিয়েছিলাম। ওই এলাকায় ভূমিকম্প নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই তা জানিয়েছিলাম। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর ফের ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। এ দিনের মতো পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলে কয়েক দিনের জন্য ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে।’’ অপর দিকে ইসলামপুরে এ দিন বেশ কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি স্কুল বন্ধ ছিল। তবে ইসলামপুরের মহকুমা শাসক ভিভু গোয়েল বলেন, ‘‘ভূমিকম্পের কারণে অনেক ছাত্রছাত্রী আতঙ্কিত। সেই কারণে অনেক স্কুলই বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি স্কুল ছুটির বিষয়টি। যদিও সেই বিষয়ে সরকারি কোনও নির্দেশ পৌঁছয়নি।’’