ইউরোপে আম-দরবারে তৈরি মালদহ

সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় এক দশক ধরে গড়ে দু’লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হচ্ছে জেলায়। প্রায় মুছে গিয়েছে ‘অফ ইয়ার’ ‘অন ইয়ার’-এর ফারাক। গত বছর জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী এ কথা উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন, এ বার রফতানি করা হবে মালদহের আম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
Share:

ফলন বাড়ছে। ফাইল চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় গত বছরই মালদহের আম পাড়ি দেয় ইউরোপীয় দেশগুলিতে। তবে মরসুমের শেষের দিক হয়ে যাওয়ায় রফতানির পরিমাণ ছিল কম। ফের আমের মরসুমেই মালদহে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই এ বার শুরু থেকেই তাঁর কাছে বিদেশে আম রফতানির দাবি জানাবেন জেলার ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই জেলার আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন উদ্যানপালন দফতরের কর্তারা। মালদহের আম ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই উদ্যান পালন দফতর গত বছর কিছু আম বিদেশে পাঠিয়েছিল। এ বার আম রফতানিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব।” জেলায় আমকেন্দ্রিক শিল্প গড়ে তোলারও দাবি জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় এক দশক ধরে গড়ে দু’লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হচ্ছে জেলায়। প্রায় মুছে গিয়েছে ‘অফ ইয়ার’ ‘অন ইয়ার’-এর ফারাক। গত বছর জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী এ কথা উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন, এ বার রফতানি করা হবে মালদহের আম। বাংলাদেশের মতো পড়শি দেশে তো বটেই, পাঠানো হবে ইউরোপেও।

Advertisement

এত দিন মালদহের আম মূলত যেত ত্রিপুরা, অসম, দিল্লির মতো রাজ্যগুলিতে। সব মিলিয়ে এর পরিমাণ ছিল বছরে গড়ে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। তাতে কিন্তু বড় লাভ হয় না, দাবি চাষি ও ব্যবসায়ীদের। তাই ব্যবসায়ীদের একাংশ আম রফতানিতে উৎসাহিত হন না।

মহদিপুর এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় বাংলাদেশে আমদানি শুল্ক ছিল মাত্র ১০ টাকা। তবে বছর পাঁচেক আগে বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আমদানি শুল্ক ৫০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়ায় মাত্র এক কেজি আম রফতানি করতে খরচ পড়ছে ৬০ টাকা। এ ছাড়া পরিবহণ, শ্রমিকের খরচও রয়েছে। তার পর থেকেই বাংলাদেশে আম রফতানি বন্ধ।

গত বছর ইতালি, ব্রিটেনের মতো দেশে প্রায় তিন কুইন্টাল আম পাঠানো হয়েছিল। যা মোট উৎপাদনের অতি সামান্য অংশ। জেলায় ‘হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ না থাকায় বারাসতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আম। সেখান থেকেই বিদেশে গিয়েছিল। এ বার জেলাতেই ওই প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। তাই শুরু থেকেই বিদেশে পাঠানোর কাজ চালানো যাবে বলে জানিয়েছেন উদ্যান পালন দফতরের সহ-অধিকর্তা রাহুল চক্রবতী। তিনি বলেন, “রোগ জীবাণু নষ্ট করতে গরম জলে আম ধোয়া হয়। এ বার জেলাতেই সেকাজ হবে। আশা করছি এ বার আরও বেশি আম বিদেশে পাঠাতে পারব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন