হাতি থেকে বাঁচতে ঘাস

হাতি খায় না এমন ফসল চাষ করার ভাবনাচিন্তা শুরু করা হয়। এরপরেই আলিপুরদুয়ার জেলা প্রসাশনের কর্তারা চাষিদের সেট্রোনিলা চাষের পরামর্শ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৬:৫০
Share:

আশা: চলছে চাষ। নিজস্ব চিত্র

সারা বছর ধরেই লেগে থাকে বুনো হাতির হানা। আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনাঞ্চল ঘেরা ভুটান সীমান্তের কাঞ্জালিবস্তির ঘটনা এমনই।

Advertisement

বুনো হাতির ভয়ে গ্রামের অধিকাংশ চাষি চাষ প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। দুই-একজন বছরে মেরেকেটে দু’একটি ফসল চাষ করলেও ঘরে পুরো ফসল তুলতে পারছিলেন না। নিয়মিত ফসলের অর্ধেকই নষ্ট করে দিচ্ছিল বুনো হাতির দল। এর থেকে চাষিদের বাঁচাতে আসরে নামেন প্রশাসনের কর্তারা।

হাতি খায় না এমন ফসল চাষ করার ভাবনাচিন্তা শুরু করা হয়। এরপরেই আলিপুরদুয়ার জেলা প্রসাশনের কর্তারা চাষিদের সেট্রোনিলা চাষের পরামর্শ দেন।

Advertisement

সাফাইয়ের ফিনাইলে, কখনও কোনও কীটনাশকে সেট্রোনিলা ঘাসের তেলের ব্যবহার হয়। এই ঘাস অর্থকরী এবং হাতিও খায় না। তাই ফসল নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচতে জেলাশাসক উদ্যোগ নিয়ে সেট্রোনিলা চাষ শুরু করার সমস্ত ব্যবস্থা করেন। ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় বিঘার পর বিঘা সেট্রোনিলা ঘাস চাষ হচ্ছে। কিন্তু এতদিন সেখানে ঘাস থেকে তেল বের করার মতো পরিকাঠামো ছিল না। ফলে মার খাচ্ছিল চাশিদের লাভ। এই পরিস্থিতিতে জেলাপ্রশাসন মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনেন বিষয়টি। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে রাজ্য সরকার ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। এ বার সেই টাকা দিয়ে সেট্রোনিলা ঘাস থেকে তেল নিষ্কাশন করার প্ল্যান্ট বসানো হচ্ছে। সেই তেলই বাজারজাত করা হবে। এর মাধ্যমে আর্থিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া কাঞ্জালি বস্তির বাসিন্দারা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন। ওই প্ল্যান্ট চালুর জন্য তৎপরতাও শুরু হয়েছে।

আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক দেবীপ্রসাদ করণম জানিয়েছেন, “সেট্রোনিলা চাষে সাফল্য আসার পরেই কাঞ্জালিবস্তিতে সেট্রোনিলা তেল নিষ্কাশনের একটি প্ল্যান্ট বসানোর জন্য রাজ্য সরকার কুড়ি লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে।টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হয়েছে।’’ চার পাঁচ দিনের মধ্যে প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তাঁর আশ্বাস। তিনি আরও জানান, “জেলায় এই প্রথম সেট্রোনিলা প্ল্যান্ট বসছে।’’

সেট্রোনিলা ঘাস থেকে তেল বের করে সেটা প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করা হবে। গোটা প্রক্রিয়ার জন্য এলাকার চাষিদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্টী গড়া হয়েছে। গোষ্টীর সদস্যরা পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করবেন। লভ্যাংশ তাঁদের মধ্যেই ভাগ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন