সড়কের জন্য জমি নয়, জোট চাষিদের

চার লেনের সড়কের জন্য জমি দিতে অস্বীকার করে ফের জোট কৃষকদের।আট বছর আগে ধূপগুড়ি শহরের ধার দিয়ে চার লেনের সড়ক নির্মাণের জন্য কৃষি জমি চিহ্নিত করেছিল মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে কয়েকবার বৈঠকও হয়। কিন্তু প্রতিবারই কৃষকরা জমি দিতে অস্বীকার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:১৪
Share:

চাষিদের জমায়েত।—নিজস্ব চিত্র

চার লেনের সড়কের জন্য জমি দিতে অস্বীকার করে ফের জোট কৃষকদের।

Advertisement

আট বছর আগে ধূপগুড়ি শহরের ধার দিয়ে চার লেনের সড়ক নির্মাণের জন্য কৃষি জমি চিহ্নিত করেছিল মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে কয়েকবার বৈঠকও হয়। কিন্তু প্রতিবারই কৃষকরা জমি দিতে অস্বীকার করে। বেশ কয়েক বার জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকদের নিয়ে সড়ক কর্তৃপক্ষ জমি জরিপ করতে এলে কৃষকরা একজোট হয়ে বাধা দেয়। ফলে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষকে বার বারই খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে।

সোমবার ফের সড়কের জন্য জমি চিহ্নিত হয়েছে এমন কয়েকটি গ্রামের কয়েক’শো কৃষক মিছিল করে ধূপগুড়ির কদমতলায় জমায়েত হয়ে কৃষি জমি না দেওয়ার অঙ্গীকার করে। সারাবাংলা কৃষিজমি, বাস্তু ও জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির ধূপগুড়ি শাখার সভাপতি ননীগোপাল ভাওয়াল জানান, তাঁরা মহাসড়কের বিরোধী নন। কিন্তু, তিন ফসলি, চার ফসলি কৃষি জমির উপর দিয়ে মহাসড়ক নির্মাণ করতে দেবেন না। কারণ তাতে অনেক কৃষক বা কৃষি মজুর সারা জীবনের জন্য জমি-বাড়ি হারিয়ে ফেলবে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বার বার বলেছি, কোনও ক্ষতিপূরণের লোভেই জমি দিতে রাজি নই আমরা। ধূপগুড়ির উপর দিয়ে যে জাতীয় ও পূর্ত দফতরের সড়ক আছে সেদিক দিয়েই মহাসড়ক নির্মাণ হোক।’’

Advertisement

সংগঠনের ধূপগুড়ি শাখার সম্পাদক আবু তাহের বলেন, “চার বছর আগে কোনও কৃষক শুনানিতে যাননি। তারপরেও কেন জমি নিতে বার বার আধিকারিকরা আসেন বুঝতে পারছি না। আমরা কিছুতেই জমি দেব না।”

২০০৭ সালে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ ধূপগুড়ি শহরের বাইরে মাগুরমারি ২ নম্বর পঞ্চায়েত হয়ে ধূপগুড়ির পুরসভার ৯ নম্বর ও ১ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে গাদং পঞ্চায়েতের খোলাইগ্রামের কাছে ধূপগুড়ি কলেজের সামনে ফালাকাটা রোডের সঙ্গে সংযোগ করার জন্য জমি চিহ্নিত করে। ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় ৬৫০ বিঘা জমির দরকার। কাচা পাকা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি বাড়ি ভাঙতে হবে। চিহ্নিত ওই জমির মধ্য রয়েছে বেশ কিছু দোকানপাটও। প্রায় ৫০০ কৃষি মজুরের সম্বল শুধু ভিটে বাড়ি। ভেমটিয়ার কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, “আমার দশ বিঘা জমি সম্বল। চিহ্নিত সড়কে দশ বিঘাতেই তিন ফসলি জমি পড়েছে। এই জমি চলে গেলে ক্ষতি পূরণের টাকায় ক’দিন খেয়ে বাঁচব? যে যাই বলুক আমি জমি দিতে রাজি নই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন