চার মাসের শিশুকে অত্যাচার বাবার

শিশুর মা সরস্বতীদেবী স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সত্যজিৎ অধিকারিককে বিষয়টি জানান। সরস্বতীদেবীর অভিযোগ, ‘‘স্বামী ছেলেকে মেরেছে। শাশুড়িও জড়িত।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০০
Share:

৪ মাসের শিশুপুত্রের উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠল বাবা’র বিরুদ্ধে। জমি নিয়ে পারিবারিক গোলমালের জেরে শিশুটির শরীরে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। শিশুটির মুত্রথলিতে গুরুতর চোট লাগে। সেলাইও পড়েছে। বর্তমানে সে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়ি ভক্তিনগর থানার ২ নম্বর জ্যোতিনগর কলোনির ঘটনা। শিশুটির নাম সুকুমার। তার বাবা নারায়ণ দাস পেশায় দিনমজুর। তিনি পলাতক। পুলিশ খুঁজছে।

Advertisement

বুধবার শিশুর মা সরস্বতীদেবী স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সত্যজিৎ অধিকারিককে বিষয়টি জানান। সরস্বতীদেবীর অভিযোগ, ‘‘স্বামী ছেলেকে মেরেছে। শাশুড়িও জড়িত। ওরা জমি বেচতে চান। বাধা দেওয়ায় আমাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। জলপাইগুড়ি থেকে দাদারা আসবে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব।’’ তিনি জানান, স্বামীর শাস্তি চাই।

মেডিক্যাল সূত্রের খবর, এ দিন নারায়ণ ও তাঁর মা মিনতিদেবী মেডিক্যালে যান। শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন। সে সময় সরস্বতীদেবীর বাপের বাড়ির দিকের কয়েক জন আত্মীয় সেখানে আসেন। তাঁরা অভিযুক্তদের ঘিরে ধরে পাল্টা মারধর করেন বলে অভিযোগ। লোকজন জড়ো হতেই অভিযুক্তরা পালায়। এলাকায় তাদের খোঁজ মেলেনি। কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, অভিযোগ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মারধর, খুনের চেষ্টার মামলা হতে পারে। সরস্বতীদেবীর অভিযোগ, ‘‘বসতবাড়ির দেড় কাঠা জমি বিক্রি করতে চাইছিল স্বামী ও শাশুড়ি। আমি বাধা দিয়েছি। ভাই বিমল রায় এসে স্বামীকে অনেকবার বুঝিয়েছেন। জমি-বাড়ি চলে গেলে ছেলেকে নিয়ে কোখায় থাকব। এই নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে সংসারে অশান্তি চলছে।’’

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় নারায়ণ ঘরে ফেরেন বলে অভিযোগ। মহিলার অভিযোগ, ‘‘শিশুটিকে দুধ খাইয়ে শোওয়ানোর পর শৌচাগারে যাই। চিৎকার শুনে ঘরে এসে দেখি ছেলের মুত্রথলি থেকে রক্ত ঝরছে। স্বামী পাশে শুয়ে আছে। রাতে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাই। বুধবার মেডিক্যালে রেফার করা হয়। সেখানে ভর্তির পর কাউন্সিলরকে জানান হয়।’’ মেডিক্যালের সুপার মৈত্রেয়ী কর বলেন, ‘‘শিশুটির কেটে দেওয়া জায়গা সেলাই করে দেওয়া হয়েছে।’’ চিকিৎসকেরা জানান, কী দিয়ে মূত্রথলি চিরেছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অনেকের সন্দেহ ব্লেড জাতীয় কিছু দিয়েই তা করা হয়েছে। সরস্বতীদেবী জানান, স্বামীর হাতে আঙটি রয়েছে। ঘটনার পর অবশ্য ‘ব্লেড’ দেখিনি। কাউন্সিল সত্যজিৎবাবু বলেন, ‘‘অভিযুক্ত নেশার ঘোরে কী করেছে স্পষ্ট নয়। পুলিশে যেতে বলেছি। শিশুটিকে দেখে এসেছি। মহিলার পাশে আছি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন