আঁতুড়: আবর্জনায় বদ্ধ নর্দমার জল। জন্মাচ্ছে মশা। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় মাসখানেক থাকতে হয়েছিল নার্সিংহোমে, বলছিলেন পুরাতন মালদহের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের খইহাট্টার বাসিন্দা রমা ঘোষ (নাম পরিবর্তিত)। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, ওই গৃহবধূ গত সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। বলছিলেন, ‘‘দিনগুলির কথা মনে পড়লে ঘুম আসে না। কিন্তু ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুর-পরিষেবার যা হাল, আমরা আতঙ্কিত।’’ উদ্বেগ বেড়েছে ক’দিন আগে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেরই একাধিক বাড়িতে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার লার্ভা মেলায়। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা সমীক্ষা চালাতে গিয়েই লার্ভার সন্ধান পান। সূত্রের খবর, গবাদি পশুর জল খাওয়ার পাত্রে, ফেলে রাখা বালতি, মগে সেই লার্ভা মিলেছে। সেগুলি অবশ্য নষ্ট করে দিয়েছেন তাঁরা।
সরকারি তথ্য বলছে, গত বছর পুরাতন মালদহ পুরসভা এলাকায় ১৪৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের খইহাট্টাই শুধু নয়, কর্মকারপাড়া, গাঁধীকলোনি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলপাড়া, রবীন্দ্রপল্লি, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খয়রাতি পাড়া, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীপুর ও কোর্ট স্টেশন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুরে কার্যত ঘরে ঘরে জ্বর ছিল, ছিল ডেঙ্গির প্রকোপও। বর্ষা শুরু হওয়ায় মশার দাপটে ডেঙ্গি আতঙ্ক ছেয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, পুরসভার তরফে নিয়মিত মশা মারতে স্প্রে বা ডেঙ্গি নিয়ে পুর স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি সে ভাবে প্রচার করছেন না। সাফাই নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। যেমন, রমাদেবী বললেন, ‘‘বাড়ির সামনের ভ্যাট থেকে অন্তত ১৫ দিন পরে জঞ্জাল সরে। দুর্গন্ধে টেকা দায়। নর্দমা নিয়মিত সাফ না হওয়ায় সেগুলি মশার আঁতুড়ঘর। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফুটানি মোড়ের কাছে একটি পুকুর মশার আঁতুড়ঘরে। এলাকার কমলা ঘোষ, বিষ্ণু হালদারেরা জানালেন, নর্দমার জল ও আবর্জনা ভেসে এই পুকুরে জমা হচ্ছে।
পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষের দাবি, জানুয়ারি থেকেই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সচেতন করতে। স্প্রে হচ্ছে, জঞ্জাল নিয়মিত নেওয়া হচ্ছে। পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। লার্ভা যেখানে মিলছে, সেখানকার বাসিন্দাদের আরও সচেতন করা হবে।