উৎসব করে বোরোলি মাছ বাঁচাতে উদ্যোগ

বোরোলি উৎসবকে হাতিয়ার করে উত্তরবঙ্গের বিলুপ্তপ্রায় নদীয়ালি মাছের অস্তিত্ব রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে মৎস্য দফতর কোচবিহারে আগামী ২২-২৩ মে দুদিনের ওই উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার কোচবিহারে সাংবাদিক বৈঠক করেন মৎস্য দফতরের জেলা আধিকারিক অলোকনাথ প্রহরাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৫ ০২:০৫
Share:

বোরোলি উৎসবের মেনু

বোরোলি উৎসবকে হাতিয়ার করে উত্তরবঙ্গের বিলুপ্তপ্রায় নদীয়ালি মাছের অস্তিত্ব রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে মৎস্য দফতর।

Advertisement

কোচবিহারে আগামী ২২-২৩ মে দুদিনের ওই উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার কোচবিহারে সাংবাদিক বৈঠক করেন মৎস্য দফতরের জেলা আধিকারিক অলোকনাথ প্রহরাজ। তিনি বলেন, “দূষণ, প্রজনন ঋতুতে মশারি জাল ব্যবহার, কীটনাশক ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার মত নানা কারণে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীতে বোরোলি-সহ হরেক রকমের নদীয়ালি মাছের অস্তিত্ব ক্রমশ বিপন্ন হয়ে পড়ছে। ওই সব মাছের সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা বাড়ান জরুরি। তাই জনপ্রিয় ও পরিচিত মাছ বোরোলির নামাঙ্কিত উৎসবকে সামনে রেখে বিলুপ্তপ্রায় সব প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব রক্ষায় উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। উৎসবের প্রস্তুতিও প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।”

কোচবিহার নেতাজী সুভাষ ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ওই উৎসবের উদ্বোধন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। চত্বরজুড়ে সাজানো বোরোলির রকমারি পদের পাশাপাশি নদীয়ালি হরেক মাছের মেনু চেখে দেখার সুযোগও পাবেন আগ্রহীরা। খরচ করতে হবে ৩০-১০০ টাকা। এ ছাড়াও পাবদা, পিঠকাটা, চাপিলা, বোয়াল, মৌরলার মত বিলুপ্তপ্রায় নদীয়ালি মাছের সম্ভার ফেরাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার মত একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

রাজাদের আমলে মহারানি ইন্দিরা দেবী মুম্বই বা কলকাতায় থাকলে বোরোলি মাছ বিমানে প্যাকেট করে পাঠানো হত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জ্যোতি বসুও উত্তরবঙ্গে এলে তাঁর মেনুতেও থাকত বোরোলি। জেলার বাজারে ওই বোরোলির চাহিদা এখনও ব্যাপক। একটু বড় আকারের বোরোলি কেজিপ্রতি ১ হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়। তুলনামূলক ছোট আকারের বোরোলির দাম কেজিপ্রতি ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যেই ওঠানামা করে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম বলে অন্য বিলুপ্তপ্রায় নদীয়ালি মাছের দামও বেশী। অনেকক্ষেত্রেই তা সাধারণ ভোজনরসিক বা মৎস্যপ্রেমীদের নাগালের বাইরে থাকছে। উৎসবে ওই সব নদীয়ালি মাছের উৎপাদন বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হবে। যোগ দেবেন দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে আসা বিশেষজ্ঞরা।

মৎস্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উৎসবে এখনও পর্যন্ত রকমারি মাছের ৩৫টি রেসিপিতে তৈরি মেনু রাখা হবে বলে ঠিক হয়েছে। তারমধ্যে আটটি মেনুই থাকছে স্রেফ উত্তরের অলিখিত মাছের রাজা বলে পরিচিত রুপোলি বোরোলির। তালিকায় রয়েছে বোরোলি ফ্রাই, বোরোলি ঝাল, স্টিম বোরোলি, দই বোরোলি, বোরোলি কড়াইশুঁটি, তেল বোরোলি ও বোরোলি কালিয়া। এ ছাড়াও থাকছে তেল চাপিলা, চাপিলা চচ্চড়ি, মৌরলা ফ্রাই, কাজলি টোস্ট, কাজলি পাতুরি, বাতাসি ঝাল, পাবদা পাতুরি, চিংড়ি মালাইকারি, ভেটকি ওরলি, বাটা ফ্রাই, দই কাতলা, তেল চিতলের মত হরেকরকম খাবারের সম্ভার। কোচবিহারের বাসিন্দা রাজ্যের পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বোরোলির মত সমস্ত নদীয়ালি মাছ বাঁচাতে সত্যিই ওই উৎসব নিঃসন্দেহে দারুণ উদ্যোগ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন