আহেলি পালের রক্তের রিপোর্ট।
প্রবল শীতের মধ্যেও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে জ্বরে আক্রান্তের খোঁজ মিলল শিলিগুড়ি পুর এলাকায়। শিলিগুড়ির ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যাচক্র কলোনি এলাকার বাসিন্দা ১১ বছরের আহেলি পালের জ্বর হয় জানুয়ারিতে। বুকে জল জমে। প্লেটলেট নেমে যায় ২১ হাজারে। ন’দিন নার্সিংহোমে চিকিৎসা করিয়ে এখন সে বাড়িতে। কিন্তু ডাক্তার তাকে অন্তত দেড় মাস বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, র্যাপিড কিট টেস্টে তার দেহে ডেঙ্গির জীবাণু মেলে।
এ বার জানুয়ারিতে অনেক দিনই ন্যূনতম তাপমাত্রা দশের নীচে নেমেছিল। এমন ঠান্ডার মধ্যে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে জ্বরের ঘটনায় চিন্তিত চিকিৎসকেরা। বাসিন্দারা আতঙ্কিত। এ বারে পুজোর আগে-পরে শহরে ডেঙ্গি সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। কমপক্ষে ১৩ জন মারা যান। ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাচক্র কলোনিতেও ঘরে ঘরে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে জ্বর হয়েছিল। আহেলির কাকা দিলীপ পাল এবং ঠাকুমা বনলতা দেবীরও একই উপসর্গ নিয়ে জ্বর হয় অক্টোবরে। আহেলির কাকার দাবি, আহেলিরও ডেঙ্গি হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকই এ কথা জানিয়েছেন। আহেলি মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বাড়ি ফিরেছে।’’
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত দু’মাসে ওই বালিকারই ডেঙ্গি মিলেছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা করেই তাঁরা রিপোর্ট দেন।’’ যদিও দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার তরফে এখনও সাফাইয়ের কাজ, মশার লার্ভা মারতে জোর দেওয়া বা নজরদারি সে ভাবে শুরু হয়নি। রাজ্যের তরফে নির্দেশ পেয়ে এসজেডিএ-ও ডেঙ্গি প্রতিরোধে নেমেছিল। তারাই বা কী করছে, উঠেছে সেই প্রশ্নও। ফেব্রুয়ারি মাস পার হলেই গরম পড়বে। তখন ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। বিদ্যাচক্র কলোনির বাসিন্দা রিনা ঘোষ, ভারতী পালদের অভিযোগ, কয়েক দিন ব্লিচিং ছড়ানো, তেল স্প্রে হয়। তার পর কেউ কিছু করছে না।
চিকিৎসক শেখর চক্রবর্তীর কথায়, ডেঙ্গি থেকেই বালিকার শরীরে জল জমতে পারে। তিনি জানান, ডেঙ্গির বাহক কোনও পূর্ণাঙ্গ মশা থেকে এই রোগ সংক্রমণ ঘটতে পারে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ডেঙ্গির বাহক মশাগুলো যে ডিম দিয়েছে, তা নিকাশির জলে, মাটিতে রয়ে গিয়েছে। গরম পড়তেই ডেঙ্গি জীবাণুর বাহক হয়ে মশা জন্মাবে। তাই শীত থাকতেই লার্ভানাশক ছড়ানো দরকার।