ফের গুলি রায়গঞ্জে 

ফের গুলি রায়গঞ্জে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ের একটি হোটেলের সামনে ওই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫২
Share:

গুলি-কাণ্ড: উদ্ধার হয়েছে দু’টি পিস্তল। নিজস্ব চিত্র

ফের গুলি রায়গঞ্জে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ের একটি হোটেলের সামনে ওই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতে ওই এলাকা থেকেই তাদের ধরা হয়। গুলিবিদ্ধ জখম যুবকের নাম নেহাল দাস। পেশায় মাটি ব্যবসায়ী নেহালের বাড়ি রায়গঞ্জের সেবকপল্লি এলাকায়। তাঁর ডান উরুতে একটি গুলি লেগেছে। তাঁকে প্রথমে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম পার্থ মিত্র, পৃথ্বীশ সাহা, রাজু ঘোষ, অনিকেত পাসোয়ান ও ছোটন বাঁশফোর। পার্থ ও পৃথ্বীশের বাড়ি শহরের উত্তর মোহনবাটী ও সুদর্শনপুর এলাকায়। বাকিদের বাড়ি শহরের খরমুজাঘাট রোড এলাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে দু’টি নাইন এমএম পিস্তল, ন’রাউন্ড কার্তুজ ও দু’টি মোটরবাইক উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি, খুনের চেষ্টা ও বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলে পুলিশ। সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার জানান, আদালত তাদের চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। অনিকেতের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে জুভেনাইল আদালতে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ধৃতেরা ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশের দাবি। ধৃতেরা ও জখম যুবক সকলেই তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচিত। সেই কারণে ঠিকাদারির কাজ ঘিরে দলের গোষ্ঠীকোন্দলের জের কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কাউন্সিলরের স্বামীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগের সঙ্গে নেহালকে গুলির ঘটনার যোগ রয়েছে কি না পুলিশ খতিয়ে দেখছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, ‘‘তদন্তে সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’টি ঘটনায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

অন্যদিকে, আগের রাতে বন্দর সাহাপাড়া এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর চৈতালি ঘোষ সাহার স্বামী পিঙ্কুকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগে এ দিন তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুধীর ঝাঁ, ছোট্টু রায় ও মহাদেব বিশ্বাস। তাদের বাড়ি বন্দর শ্মশান রোডে। অভিযোগ, রাতে পিঙ্কু বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। দুষ্কৃতীরা ছোটগাড়িতে এসে গুলি চালায়। গায়ে গুলি লাগেনি টের পেয়ে বাসিন্দারা হইচই করলে দুষ্কৃতীরা পালায়। পরে ফের এসে চৈতালি এবং পিঙ্কু-সহ কয়েকজন বাসিন্দার উপর হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করেছে। এ দিন মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে বিচারকের নির্দেশে তাদের চারদিনের পুলিশি হেফাজত হয়। এ ক্ষেত্রেও ধৃতেরা তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘গোলমালের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। কেউ অন্যায় করে থাকলে আইন মেনে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’

বুধবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ নেহাল বন্ধুদের সঙ্গে শিলিগুড়ি মোড় এলাকার একটি হোটেল থেকে খাওয়াদাওয়া সেরে বার হতেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে আটক করে গালাগালি করে। শূন্যে গুলি চালায়। নেহাল দৌড়ে পালানোর সময় দুষ্কৃতীরা কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। পায়ে গুলি নিয়ে কোনওরকমে হাসপাতালে পৌঁছন নেহাল। পরে ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন