দিনভর লুকোচুরির পর বনকর্মীদের ছোড়া ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয় ওই চিতাবাঘটি। —নিজস্ব চিত্র।
ধানক্ষেতে লুকিয়ে ছিল। ধান কাটতে যেতেই অতর্কিতে যুবতীর উপর হামলা চিতাবাঘের। তাঁর চিৎকারে গ্রামবাসীরা ছুটে গেলে তাঁদের উপরেও ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই চিতাবাঘটি। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে কোচবিহারের মাথাভাঙা-১ ব্লকের বৈরাগীরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতগাছি এলাকায়। চিতাবাঘের হামলায় পাঁচ জনের জখম হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে নিজেদের জমিতে ধান কাটতে গিয়েছিলেন প্রতিমা ডাকুয়া নামে এক যুবতী। সেই জমিতেই লুকিয়ে ছিল একটি চিতাবাঘ। ধান কাটার কাজ শুরু করতেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। চিতাবাঘের আক্রমণে প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান ওই যুবতী। পরে তাঁর চিৎকারে ওই মাঠে আসেন এলাকাবাসী। তাঁদের উপরও ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। ঘটনায় ওই যুবতী-সহ পাঁচ জন গুরুতর জখম হন। তাঁদের উদ্ধার করে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাঁদের।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ এবং বন দফতরের কর্মীরা। ওই চিতাবাঘের আতঙ্কে তটস্থ এলাকাবাসী। ওই এলাকায় একটিই চিতাবাঘ রয়েছে, না কি আরও কয়েকটি? বন দফতর সূত্রে খবর, আপাতত একটি চিতা বাঘের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ওই এলাকায় বনকর্মীরা রয়েছেন। চিতাবাঘটির সন্ধান শুরু হয়। বিকেল ৪টে নাগাদ ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয় সেটি ।
কী ভাবে চিতাবাঘটিকে কাবু করা হয়? কোচবিহার ডিভিশনের বিজনকুমার নাথ জানান, সাতগাছি এলাকায় বীরেন্দ্র বর্মন নামে জনৈক এক জনের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল ওই চিতাবাঘটি। সেই কারণে তাঁকে কাবু করতে সুবিধা হয়েছে। বিজনের কথায়, ‘‘পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। আজ রাতেই আমরা বক্সার জঙ্গলে বাঘটিকে ছেড়ে দেব।’’
স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক রায় জানান, পিছন দিক থেকে প্রতিমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল চিতাবাঘটি। তাঁর চিৎকারে সকলে ছুটে যান। তখন ওই চিতাবাঘটি পালিয়ে যায়। পরে তার খোঁজ শুরু করলে বাকিদেরও উপরও আক্রমণ করে সে। চিতাবাঘের হামলায় আহত ধরকান্ত রায়ের কথায়, ‘‘আগে কখনও আমাদের এই এলাকায় চিতাবাঘ দেখা যায়নি।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, কারও মাথায়, কারও ঘাড়ে, কারও হাতে কামড়ে এবং নখের আঁচড় দেয় চিতাবাঘটি।