বেটিং চক্রে যুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার ৫

অনলাইনে ক্রিকেট বেটিং চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শিলিগুড়ির ৫ ব্যবসায়ীকে ধরেছে পুলিশ। ধৃতদের সঙ্গে মুম্বই, কলকাতা, ভোপাল, জয়পুর এবং অসমের বেটিং চক্রের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপে ভারত-বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল চলার সময়ে শিলিগুড়ির খালপাড়া সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ ব্যবসায়ীকে ধরেছে পুলিশ।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪২
Share:

অনলাইনে ক্রিকেট বেটিং চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শিলিগুড়ির ৫ ব্যবসায়ীকে ধরেছে পুলিশ। ধৃতদের সঙ্গে মুম্বই, কলকাতা, ভোপাল, জয়পুর এবং অসমের বেটিং চক্রের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপে ভারত-বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল চলার সময়ে শিলিগুড়ির খালপাড়া সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ ব্যবসায়ীকে ধরেছে পুলিশ। ধৃতদের থেকে ৫টি মোবাইল সহ নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, ল্যাপটপও বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, মুম্বইয়ের একটি সার্ভার থেকে অনলাইনে বেটিং চলছিল। দুপুরে প্রথম অভিযানের পরে শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া ভক্তিনগর এলাকার বেশ কয়েকটি ইন্টারনেট পার্লার এবং টিকিট বুকিঙের অফিসে পুলিশ হানা দেয়। রাতেও বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। ধৃতদের সঙ্গে আন্তরাজ্য চক্র জড়িত থাকায়, এ দিন রাত পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে চায়নি পুলিশ। ধৃতদের থেকে অসম, কলকাতা এবং দিল্লির অনেক ব্যবসায়ীর মোবাইল নম্বর পেয়েছে পুলিশ।

Advertisement

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, “বেটিং চক্রের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতেও অভিযান চলছে। সকলকে ধরার পরে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। ধৃতদের থেকে পাওয়া বেশ কিছু ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম পরীক্ষা করা হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা দিয়েছে, এ দিন খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে খালপাড়া সহ শহরের কয়েকটি এলাকায় অন লাইনে বেটিং শুরু হয়ে যায়। কোন ওভারে উইকেট পড়বে, কোন ব্যাটসম্যান কত রান করতে পারে থেকে শুরু করে খেলায় কতগুলি ক্যাচ আউট হবে, রান আউট হবে কিনা সব নিয়েই বাজি ধরা চলতে থাকে বলে অভিযোগ। বাড়িতে বসেই অন লাইনে বাজি ধরা যায় বলে এই প্রবণতা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাজি ধরে হেরে যাওয়া এক ব্যক্তিই এ দিন পুলিশকে অভিযোগ জানান বলে জানা গিয়েছে। তারপরেই খালপাড়ার একটি দোকানে পুলিশ হানা দেয়। সেখান থেকে উদ্ধার দু’টি মোবাইল পোনের সূত্র ধরে ওই এলাকা সহ শহরের অনান্য এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ দিন ধৃতদের নিজস্ব মোবাইল ছাড়াও অন্তত ৫টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অন্তত কোটি টাকার কাছাকাছি অঙ্কের বাজি এ দিন উত্তরবঙ্গের কয়েকটি এলাকা থেকে ধরা হয়। যার মূল কেন্দ্র ছিল শিলিগুড়ি। শুধুমাত্র শিলিগুড়ি শহর থেকেই কয়েক লক্ষ টাকার বাজি ধরা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, একাধিক সার্ভার থেকে অনলাইনে বাজি ধরার কাজটি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। বেশ কয়েকটি ইমেল আইডি এবং কম্পিউটার আইপিও পুলিসের হাতে এসেছে। যার সূত্রে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও একাধিক পান্ডা হাতে আসবে বলে পুলিশের তরপে দাবি করা হয়েছে।

অভিযান শুরুর পরেই কয়েকজন ব্যবসায়ী গ্রেফতার হওয়া এবং আন্তরাজ্য যোগ সামনে আসায় নড়েচড়ে বসে শিলিগুড়ি পুলিশ। শিলিগুড়ির এডিসিপি ভোলানাথ পান্ডে নিজে অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। চক্রের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা শিলিগুড়ি থানায় চলে আসেন। অনলাইন চক্রের সঙ্গে জড়িতরা ছাড়াও বাজি ধরার টাকা উদ্ধারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অনলাইনে বাজি যেখানে ধরা হয়েছে, সেখানে টাকা জমা না রেখে শহরের অন্তত দশটি জায়গায় টাকা জমা রাখা চলছিল বলে অভিযোগ। সেই টাকা উদ্ধারে শিলিগুড়ি পুলিশের বিভিন্ন শাখা এ দিন সন্ধ্যে থেকে অভিযান শুরু করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন