নাগাড়ে বৃষ্টি কমলেও, বন্যা পরিস্থিতি জারি রয়েছে উত্তরবঙ্গের তিন জেলায়। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন এলাকায় নদীর জল ঢুকে পড়ায় ঘরছাড়াদের সংখ্যা বেড়েছে। তবে পাহাড়ের রাস্তায় নতুন করে ধস নামেনি এ দিন। সোমবার দিনভর শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং এবং সিকিমের রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
গত সপ্তাহের শেষ থেকেই উত্তরবঙ্গ জুড়ে একটানা বৃষ্টি শুরু হয়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় বৃষ্টির পরিমান বেশি ছিল। গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের থেকে বেশি। টানা বৃষ্টি হয়েছে সিকিমেও। পাহাড় এবং সমতলের বৃষ্টির জেরেই উত্তরবঙ্গের নদীগুলি ফুঁসতে শুরু করে। তিস্তা, কালজানি, সঙ্কোশ কুল ছাপিয়ে যাওয়ায় লাগোয়া লোকালয়ে বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয়। জলপাইগুড়ির পদমতি এলাকায় সোমবারও প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল নদীর পাড়ের বানভাসি বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে পাঠিয়েছে।
ময়নাগুড়ি ব্লকে নদী ভাঙনও বেড়েছে। তিস্তা নদীর বাঁধেও ক্ষতি হয়েছে। ময়নাগুড়ির বিডিও শ্রেয়সী ঘোষ জানিয়েছেন, ভাঙনে বাঁধের ক্ষতি রুখতে সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে প্রশাসন। বৃষ্টি থামলেও বিভিন্ন এলাকায় এখনও জলবন্দি হয়ে রয়েছেন মানুষ। উত্তর পদমতিতে প্রায় দেড়শ পরিবার ও দোমহনীতে প্রায় আড়াইশ পরিবার এই মুহুর্তে বাঁধেও ওপর আশ্রয় নিয়েছেন৷ ব্লক প্রশাসনের তরফে ওই পরিবারগুলিকে ত্রিপল ও খাবার দেওয়া হচ্ছে৷ সেচ দফতর সূত্রে জানা গেছে, তিস্তার জল কিছুটা হলেও কমতে শুরু করেছে। তবে জলস্তর এখনও বিপদসীমার কাছাকাছি বইছে।
কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের নিজতরফ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামে তিস্তার জল ঢুকেছে। রবিবার মাঝরাত পর্যন্ত ওই এলাকাগুলিতে উদ্ধার কাজ চালায় প্রশাসন। একটি বাঁধের বেশ খানিকটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। জল বেড়েছে কালজানি এবং জলঢাকা নদীতেও। জলঢাকা নদীর জলস্তরও বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে বইছে।
তবে এ দিন পাহাড়ে বৃষ্টি হয়নি। টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় গত শনিবার রাতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রবিবার রাতের পর বৃষ্টি না হওয়ায় নতুন করে ধসের খবর মেলেনি। এ দিন দুপুরে কিছু সময়ের জন্য শিলিগুড়িতে রোদের দেখা মিললেও, বাকি সময় মেঘলা ছিল। কয়েক দফায় ইলশেগুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।