জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দফতরে রাতভর চলে নিয়োগপত্র বিলির কাজ। নিজস্ব চিত্র
কাউন্সেলিংয়ের পর নিয়োগপত্র প্রদান নিয়ে টালবাহানার অভিযোগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ দফতরে৷ রাতে নিয়োগপত্র প্রদান বন্ধ থাকবে ঘোষণা হতেই উত্তেজিত চাকরিপ্রার্থীরা শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত গোটা রাত জেগে চাকরীপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেন দফতরের কর্তারা৷
বৃহস্পতিবার বেলা বারোটা নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিং শুরু হয়৷ শিক্ষা সংসদ থেকে চাকরীপ্রার্থীদের জানানো হয় কাউন্সেলিং শেষ হওয়ার পর ওই দিনই তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র দিয়ে দেওয়া হবে৷ সংসদ সূত্রের খবর, কাউন্সেলিংয়ের জন্য মোট ২৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩৮ জন সংসদে উপস্থিত হন৷ কিন্তু তাঁদের কাউন্সেলিং শেষ হতে রাত প্রায় এগারোটা বেজে যায়৷ এর খানিক ক্ষণ পর আচমকাই মাইকে ঘোষণা হয়, রাত হয়ে যাওয়ায় রাতে আর নিয়োগপত্র প্রদান করা হবে না৷ চাকরীপ্রার্থীরা শুক্রবার হাতে নিয়োগপত্র পাবেন৷
সেই সময় শিক্ষা সংসদ দফতর চত্বরে প্রার্থীরা ছাড়াও তাদের অনেকের অভিভাবক ও পরিজনরাও ছিলেন৷ সংসদের ঘোষণা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রার্থী ও তাঁদের পরিজনদের একাংশ৷ রাত প্রায় পৌনে ১২টা নাগাদ সোজা শিক্ষা সংসদের দোতলায় চেয়ারম্যান ধর্ত্রীমোহন রায়ের ঘরে ঢুকে পড়েন তাঁরা৷ তাঁকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ যায়। এরপর চাপে পড়ে রাতেই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষা সংসদের কর্তারা৷ শুরু হয় নিয়োগপত্র তৈরির কাজ৷ রাত সওয়া তিনটা নাগাদ নিয়োগপত্র তৈরির কাজ শেষ হয়৷ তারপরই এক এক করে চাকরীপ্রার্থীদের নাম ডেকে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র বিলি শুরু হয়৷ মাঝরাতে নিয়োগ-পত্র বিলি হবে না ঘোষণা শুনে চাকরীপ্রার্থীদের একাংশ বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু অন্যদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁদেরও কেউ কেউ ভোর রাতে সংসদে চলে আসেন৷
ধর্ত্রীমোহনবাবু বলেন, ‘‘কাউন্সেলিং শেষ হতে হতেই প্রায় মাঝ রাত হয়ে গিয়েছিল৷ নিয়োগপত্র তৈরিতেও সময় লাগত। সেই জন্যই সবার সুবিধার কথা ভেবে শুক্রবার তা বিলি করা হবে বলে জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু চাকরীপ্রার্থীরা আমার ঘরে এসে দাবি করতে থাকে, তাঁদের রাতেই নিয়োগপত্র লাগবে৷ তাই আমরা রাত জেগেই তাঁদের নিয়োগপত্র দিয়েছি৷’’ মাঝ রাতের ঘোষণা শুনে যারা বাড়ি ফিরে গেছেন, তাদের এ দিন নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে৷