এক দিকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি অন্য দিকে গুমোট গরম। গত সপ্তাহে বর্ষা ঢোকার পর থেকে উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি চলছে, কিছু এলাকার হাওয়ায় যেন গরমের হলকা।
বঙ্গোপসাগর থেকে উড়ে আসা মেঘে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। শনিবার গভীর রাত থেকে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি শুরু হয়। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে ডুয়ার্সেও। মালদহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার বিকেলের পর থেকে উষ্ণতা বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি বালুরঘাটের বাসিন্দাদের। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক দিনও পরিস্থিতি বদলানোর কোনও সম্ভাবনা নেই।
এ বছর তুলনামূলক ভাবে কিছুটা দেরিতে উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকেছে। বর্ষার মেঘকে জমাট করেছে ঘুর্ণাবর্ত। উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের আকাশে অবস্থান করা একটি ঘুর্ণাবর্তের টানে বঙ্গোপসাগর থেকে মেঘ উড়ে আসতে শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই একটি নিম্নচাপ উত্তরবঙ্গের উপরে ছিল। সেটিই পরিণত হয়েছে ঘুর্ণাবর্তে। অবস্থান অনুযায়ী, ঘুর্ণাবর্তটি রয়েছে হিমালয় পাদদেশ লাগোয়া এলাকার ওপরেই। সে কারণেই শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতে নাগাড়ে বৃষ্টি চলেছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। গত শনিবার রাতে শিলিগুড়িতে ঝোড়ো হাওয়ায়ও বয়েছে। কিছু সময়ের মধ্যেই ঝোড়ো হাওয়া থেমে গেলে বৃষ্টি শুরু হয়। একই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়িতেও। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এক রাতেই জলপাইগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকায় প্রায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিন কয়েক আগেই এক রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছিল জলপাইগুড়ি পুর এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা৷ রবিবার ভোর থেকেই বৃষ্টি হয়েছে ইসলামপুরে। বৃষ্টির ফলে এলাকাতে তাপমাত্রা কিছুটা কম রয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেও বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি দুই শহরে। শিলিগুড়িতে সকাল থেকে কখনও ইলশেগুঁড়ি কখনও মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরের পরে বৃষ্টি কমলেও আকাশ ছিল কালো মেঘে ঢাকা।
জলপাইগুড়িতেও দিনভর আকাশ মেঘলা ছিল। শনিবার রাত থেকে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালবাজারেও বৃষ্টি হয়েছে। মালবাজারে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লিস-ঘিস নদীর জলস্তরও বেড়েছে। কোচবিহারে সকাল এগারোটা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, গুমোট গরমে হাঁসফাস করছে মালদহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দারা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, হিমালয় পাদদেশ এলাকায় ঘুর্ণাবর্ত শক্তিশালী হওয়ায় সেখানেই মেঘ এসে জড়ো হয়েছে। তার ফলেই মালদহ-দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো জেলাগুলি আপাতত বৃষ্টি বঞ্চিত রয়েছে।
সিকিম পাহাড়েও গত দু’দিন ধরে বৃষ্টি চলেছে। গ্যাংটক, মঙ্গন, নামচি সর্বত্রই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে। আগামী তিন দিনে আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘আগামী বাহাত্তর ঘণ্টায় বৃষ্টি চলবে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।’’