ধূপগুড়িতে দুর্ঘটনায় মৃত ৪, আহত ৩৩

শুক্রবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ধূপগুড়ি ও গয়েরকাটার মধ্যে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে বাস ও লরির মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হল ৪ জনের। জখম হয়েছেন ৩৩ জন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ জানায়, এদিন ভোরে গুয়াহাটি থেকে শিলিগুড়িগামী একটি বেসরকারি বাসের সঙ্গে অসমগামী একটি লরির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ধূপগুড়ির চৌপথী থেকে এক কিলোমিটার দূরে বামনি সেতুর কাছে জাতীয় সড়কের বাঁকে এই দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলেই বাসের চালক ও বাসের এক যাত্রী মারা যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০২:১৪
Share:

দুর্ঘটনার পরে রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।

শুক্রবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ধূপগুড়ি ও গয়েরকাটার মধ্যে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে বাস ও লরির মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হল ৪ জনের। জখম হয়েছেন ৩৩ জন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর।

Advertisement

পুলিশ জানায়, এদিন ভোরে গুয়াহাটি থেকে শিলিগুড়িগামী একটি বেসরকারি বাসের সঙ্গে অসমগামী একটি লরির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ধূপগুড়ির চৌপথী থেকে এক কিলোমিটার দূরে বামনি সেতুর কাছে জাতীয় সড়কের বাঁকে এই দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলেই বাসের চালক ও বাসের এক যাত্রী মারা যান। ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় মারা যান আরও দু’জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা যাত্রীদের জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

পুলিশ সুত্রে জানা যায়, বাসের চালকের নাম মানবাহাদুর কাটরি (৩৫)। বাড়ি নেপালের খানডিবাড়িতে। লরি চালকের নাম নুরুল হক (৪৮)। তাঁর বাড়ি বিহারের জামতলা জেলায়। অন্য দু’জন মৃত যাত্রীর পরিচয় রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। বাসটিতে সম্ভবত চল্লিশ জন যাত্রী ছিলেন।

Advertisement

এদিন হাসপাতালে গেলে শোনা যায় শিশু-মহিলাদের কান্নার রোল। কেউ স্বামীর খোঁজে , কেউ বাবা-মা’র খোঁজে কেউ বা সন্তানের খোঁজে উদভ্রান্তের মতো ছোটাছুটি করছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ ও দমকল। জখম যাত্রীদের উদ্ধারে পুলিশের সঙ্গে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারাও। দুর্ঘটনার ফলে জাতীয় সড়কে তিন ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

ঘটনাস্থলের কাছেই বাড়ি অভিজিৎ মন্ডলের। তিনি বলেন, ‘‘তখন ভোর সাড়ে চারটে হবে। ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ প্রচন্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে মনে হল কোন জোরালো বিস্ফোরণ হয়েছে। বাড়ির বাইরে এসে রাস্তায় উঠতেই দেখি অন্য গাড়ির চালকরা দৌড়াদৌড়ি করছেন। একটু এগিয়ে যেতেই শুনি মহিলা-শিশুদের কান্নার আওয়াজ। চোখের সামনে দেখি ট্রাক-বাস ভয়ঙ্কর ভাবে মুখোমুখি হয়ে লেগে আছে। চারদিক রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তত ক্ষণে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসতে থাকেন।’’

ধূপগুড়ি হাসপাতালে দুর্ঘটনায় মাথা ফেটে ও হাতে কেটে যাওয়ায় ভর্তি কালিম্পংয়ের নির্মলা লেপচা। তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। মুখে-বুকে আঘাত পেয়ে জখম হয়েছেন অসমের গুয়াহাটির মিনি গগৈ। তিনি হাসপাতালে ভর্তি । তারা জানান, ‘‘ভোর চারটের দিকে একবার একটু ঘুম ভেঙেছিল। পরে আবার ঘুমিয়ে পড়ি। তারপর যখন দুর্ঘটনার শব্দে ঘুম ভাঙল, দেখি শরীর রক্তে ভাসছে। প্রচন্ড ভয় পেয়ে যাই। কিছু ক্ষণের জন্য কথা বের হচ্ছিল না মুখ দিয়ে।’’ মিনি গগৈ অস্পষ্ট ভাবে হাসপাতালের নার্সকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘আমি এখন কোথায়?’’

ধূপগুড়ি থানার আই সি যুগলচন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘‘খবর পেয়েই দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। মর্মান্তিক ঘটনা। চার জন মারা গিয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কী ভাবে বাস-লরিটির মধ্যে মুখোমুখি ধাক্কা লাগল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা দূরপাল্লার বাসটির সম্ভবত সামনের চাকা ফেটে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন