পুজোর মুখে লোডশেডিং বাড়ছে

বলা হয়েছিল, সংস্কার কাজের জন্য এক দিন অথবা বড়জোর দু’দিন কয়েক ঘণ্টা করে এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হবে। যদিও, প্রতিদিনই শিলিগুড়ি শহর জুড়ে কয়েক দফায় লোডশেডিং চলছে বলে অভিযোগ। শনি-রবি অথবা অন্য ছুটির দিনে লোডশেডিঙের দাপট বেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৭
Share:

বলা হয়েছিল, সংস্কার কাজের জন্য এক দিন অথবা বড়জোর দু’দিন কয়েক ঘণ্টা করে এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হবে। যদিও, প্রতিদিনই শিলিগুড়ি শহর জুড়ে কয়েক দফায় লোডশেডিং চলছে বলে অভিযোগ। শনি-রবি অথবা অন্য ছুটির দিনে লোডশেডিঙের দাপট বেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি। গত শনিবার চম্পাসারি এলাকায় চার ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। তার আগের সপ্তাহেও পরপর দু’দিন ওই এলাকায় টানা লোডশেডিং চলেছে বলে অভিযোগ। এ দিন রবিবার হাকিমপাড়ায় তিন দফায় লোডশেডিং হয়েছে। বিধানরোডের কিছু এলাকায়, দেশবন্ধু পাড়া, হায়দারপাড়া এলাকাতেও লোডশেডিং হয়েছে। বিদ্যুৎ পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছে, পুজোর আগে সংস্কারের জন্য প্রতি এলাকায় বিভিন্ন দফায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হচ্ছে।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে। গত জুলাই মাস থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংস্কারের কাজ চলছে। প্রতি ওয়ার্ডে সপ্তাহে এক দিন করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হবে বলে পর্ষদ জানিয়েছিল। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাস দুয়েক ধরে প্রতি সপ্তাহেই লোডশেডিং চলছে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ছুটির দিন হলেই লোডশেডিঙের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পুজোর মুখে লোডশেডিঙে ব্যবসায়ীরা তো বটেই, দুর্ভোগে পড়েছে পুজো উদ্যোক্তারাও। অনেক মণ্ডপেই ড্রিল মেশিন, ওয়েলডিং, রঙের স্প্রে মেশিনের কাজ চলছে। লোডশেডিঙের জেরে সেই কাজও বন্ধ রয়েছে। শিলিগুড়ির মাটিগাড়া মায়াদেবী ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তা সমর বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রতিদিনই কোনও না কোনও সময়ে লোডশেডিং চলছে। তার জেরে বারবার মণ্ডপের কাজ থমকে থাকছে। মহালয়ার পরে যেন লোডশেডিঙের সময় বেড়ে গিয়েছে।’’ দুর্ভোগে ব্যবসায়ীরাও। কখনও বৃষ্টি, কখনও রোদের জেরে আবহাওয়া গুমোট। তাপমাত্রা যথেষ্ট বেশি। শিলিগুড়ির হার্ডওয়ার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি প্রদ্যুম্ন সিংহ চৌহ্বান অভিযোগ করে বলেন, ‘‘যে ক’দিন যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছিল, তার কিছুই মানেনি। আমরা পর্ষদকে অভিযোগও জানিয়েছি। কোনও ফল হয়নি। এমন কতদিন চলবে?’’

Advertisement

ভোগান্তিতে পুলিশ-প্রশাসনও। শিলিগুড়ি পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘সারা দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং চলছে। প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে। বাসিন্দারাও ক্ষুব্ধ। যে কোনও সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।’’

পর্ষদের দাবি, পুজোর আগে ফি বছর বিদ্যুতের লাইন সংস্কার করতে হয়। সরবারহ তার বদলানো হয়, তারে এসে পড়া গাছের ডাল ছেটে দেওয়া হয়। সংস্কার কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হয়। অভিযোগ, সংস্কারের কাজে ঢিলেমির কারণেই প্রতিদিনই কয়েক দফায় লোডশেডিং চলছে। এক দিনের কাজ করতে পনেরো দিন লেগে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিদ্যুৎ পর্ষদ স্বাভাবিক ভাবেই অভিযোগ মানতে চায়নি। পর্ষদের শিলিগুড়ির জোনাল ম্যানেজার সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কবে কখন কোন এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে, তা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হয়েছে। সংস্কার কাজে একটু সময় লাগবে।’’ সূত্রের খবর, আজ সোমবারের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার জেরেই সব এলাকায় একসঙ্গে কাজ চলছে।

বাসিন্দাদের অনেকেই অবশ্য দাবি করেছেন, আগাম লোডশেডিঙের খবর যথাযথ ভাবে জানানো হয় না। শিলিগুড়ির পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা সুজয় ঘটক পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে গড়পরতা প্রতিদিনই কয়েক দফায় লোডশেডিং চলছে।’’

পার্কিং ফি নিয়ে অভিযোগ। পার্কিংয়ের ফি আদায়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ির সেবক রোড়ে দুই মাইল এলাকায় একটি শপিংমলের সামনে। এক ঘন্টা বাইক রাখার জন্য অনেকের কাছ থেকেই পার্কিংয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা চার চাকার গাড়ি রাখার স্লিপ দিয়ে ১০ টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ। নিয়ম মাফিক এক ঘন্টা বাইক পার্কিংয়ে রাখার জন্য পুরসভার তরফে ৫ টা ফি ধার্য রয়েছে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য নিজেই। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ কেউ জানালে বিষয়টি নিশ্চয়ই খতিযে দেখা হবে।’’ তৃণমূলের তরফে পার্কিং ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন