দূষণ: শিলিগুড়িতে এ ভাবেই পড়ে থাকে জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র
পাড়ার মোড়ে ডাঁই করে জঞ্জাল। বাজারের সামনে ছড়িয়ে বাসি আবর্জনা। ফুটপাথে রাখা ভ্যাট উপচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। রবিবারের শিলিগুড়ির পাড়া-রাজপথের দৃশ্য এমনই ছিল বলে অভিযোগ। অথচ এই শহরকেই পরিষ্কার রাখতে মাস সাতেক আগে মোবাইল অ্যাপ চালু করেছিল পুরসভা। খরচ হয়েছিল লক্ষাধিক টাকা। শহরের কোথাও আবর্জনা পড়ে থাকলে মোবাইল অ্যাপে ছবি তুলে পাঠালে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জঞ্জাল পরিষ্কার হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছিল। এখন সেই অ্যাপে ছবি তুলে পাঠালেও কোনও সাড়া মেলে না। প্রতি দিনের জঞ্জাল পরিষ্কারও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, উত্তরবঙ্গের রাজধানী বলে পরিচিত শিলিগুড়ি শহরের এই হাল হবে কেন?
হাকিমপাড়ার প্রতিটি গলির রাস্তায় রবিবার সকাল-দুপুর জঞ্জাল ছড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। হায়দার পাড়া বাজারের সামনে এ দিন সকাল থেকে ডাঁই করে রাখা ছিল আবর্জনা। প্রণামী মন্দির রোডের সামনে ভ্যাট থেকে আবর্জনা মুখে করে কুকুর রাস্তায় ছড়াচ্ছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সামনেও আনাজপাতির খোসা জড়ো করে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শনিবার রাতে বিধানমার্কেটের জঞ্জাল রাস্তার পাশে ফেলা হয়েছিল। রবিবার সকালে পরিষ্কার হয়নি। শুধু রাস্তায় নয়, মহানন্দা নদীর দু’পাশ জুড়েও ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনা।
কী বলছেন পুরসভার শাসক-বিরোধীরা?
শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য মেনে নিয়েছেন, নিয়মিত জঞ্জাল পরিষ্কারে সমস্যা হচ্ছে। তাঁর যুক্তি, লোকবল কম। অশোকবাবু বলেন, ‘‘এখন টাকা দিলেও জঞ্জাল সাফাইয়ের লোক পেতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময়ে ছুটির দিনে কাজ করতে চান না সাফাইকর্মীরা। আমরা দেখছি কী ভাবে সমস্যার মোকাবিলা করা যায়।’’ মেয়রের যুক্তি মানতে রাজি নন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব। তাঁর দাবি, ‘‘কাজ করতে না জানলে অনেক যুক্তি দেওয়া যায়। তবে পুরসভায় প্রশাসক থাকার সময়ে রাজ্য সরকার কোটি টাকা খরচ করে জঞ্জাল পরিষ্কারের সরঞ্জাম কিনে দিয়েছিল। তার পরও শহর জুড়ে এমন জঞ্জাল ছড়িয়ে থাকা দুর্ভাগ্যজনক।’’ গৌতমবাবুর দাবি, পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হলে মেয়র সরে দাঁড়ান।
গত বছরের অগস্ট মাসে নাগরিক কনভেনশন করে মোবাইল অ্যাপের উদ্বোধন হয়েছিল। মেয়রের কথায়, ‘‘পরিকাঠামো উন্নত না করে অ্যাপ চালু করা যাবে না। এটা বুঝেই অ্যাপ বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ স্মার্ট পরিষেবা দূর অস্ত আপাতত জঞ্জাল পরিষ্কারের নিয়মিত পরিষেবা সুষ্ঠু ভাবে চলুক এমনই দাবি শহরবাসীর।