প্রতীকী ছবি।
সত্য, না কি মনগড়া কাহিনি— তা বুঝতে হিমশিম খেতে হল চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীর পরিবার এবং পুলিশকে।
স্কুল ছুটির পরে কয়েকজন এসে খেলতে নিয়ে যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন মাঠে এবং দিচ্ছে পুরস্কারও। জলপাইগুড়ির চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী বাড়িতে এমনই জানিয়েছিল। আরও জানিয়েছিল, সেই লোকেরা নাকি বলেছে যে, তাকে কলকাতায় খেলতে নিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে জোর করেই। বাড়ির মোবাইলে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানায় ছাত্রীটি।
পরিবারের তরফে বিষয়টি জানানো হয় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায়। স্কুল ছুটির সময় সাদা পোশাকে নজরদারি চালাতে শুরু করে দিনতিনেক পর পুলিশ বুঝতে পারে, পুরোটাই মনগড়া গল্প। আসলে, সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মণের মতো কলকাতায় খেলতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল ওই ছাত্রী। ছাত্রীটি জানে, স্বপ্না বর্মণ প্রশিক্ষণ নেন কলকাতায়। স্বপ্নার ভক্ত ছাত্রীটিও চেয়েছিল কলকাতায় কোচিং নিতে যেতে। ছাত্রীর কাকার কথায়, ‘‘মাসখানেক আগে ও কলকাতায় যাওয়ার আবদার করে। কিন্তু কেউ সায় দেয়নি। তার পরই এই গল্প বানানো শুরু!’’
গত ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রীটি বাড়িতে হুমকির কথা প্রথম জানায় এবং পর পর তিন দিন স্কুল থেকে কয়েকটি কাপ, মেডেল হাতে বাড়ি ফিরে জানায়, ওই ব্যক্তিরাই তাকে বিভিন্ন মাঠে খেলিয়েছে, পুরস্কার দিয়েছে। অপহরণের আশঙ্কায় পুলিশে অভিযোগ জানায় পরিবার।
এর পরই কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার-সহ কয়েকজন অফিসার স্কুলের সামনে নজরদারি শুরু করেন। বিশ্বাশ্রয়বাবু বলেন, “লোকগুলোকে দেখলেই মেয়েটিকে ইশারা করতে বলেছিলাম। মেয়েটি ইশারাও করত। কিন্তু গিয়ে কাউকে পাওয়া যেত না। তাতেই খটকা লাগে।’’ মোবাইলের কল-রেকর্ড পরীক্ষা করে পুলিশ জানতে পারে, ছাত্রীর উল্লেখ করা সময়ে কোনও ফোন আসেনি-যায়নি। এর পরই ছাত্রীকে চাপ দেওয়ায় সে সব স্বীকার করে। আদতে, টোটোর ভাড়া বাঁচিয়ে সে নিজেই মেডেল কিনে বাড়ি ফিরত।
ছাত্রীর বাবা গাড়িচালক, মা গৃহবধূ। আইসি বলেন, “এতটুকু বাচ্চা মেয়ে যে ভাবে নাকানি-চোবানি খাইয়েছে, বলার নয়! ওর পরিবারকে বলেছি, ওকে যাতে খেলার সুযোগ করে দেওয়া হয়।’’