ধনতেরাসে ভিড় উপচে পড়েছে দোকানে। এক অলঙ্কার ব্যবসায়ীর কথায়, আগের থেকে এখন ধনতেরাসে ভিড় অনেক বেশি হচ্ছে। গত কয়েক মাসে দাম বেড়েছে হু হু করে৷ যার জেরে সোনার জিনিসে হাত দিতে সাহস দেখাচ্ছেন না অনেকেই৷ ফলে ধনতেরাসে ব্যবসা না জমায় হতাশ সোনার ব্যবসায়ীদের। ক্রেতাদের ভিড় অবশ্য দেখা যাচ্ছে পিতল, কাঁসার দোকানে। তা দেখে বেশ কিছু বাসনের দোকানও পোস্টার লাগিয়েছে, “ধনতেরাস উপলক্ষে রাত বারোটা পর্যন্ত দোকান খোলা।”
বিক্রি হচ্ছে আলোর বাজিও। আলো যেন ঘুরছে লাট্টুর মতো। লাল, নীল, সবুজ আলোর টুকরো ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তা জুড়ে। পথচারীদের গায়েও খণ্ড খণ্ড আলোর অংশ। কোচবিহারে এই আলোর নাম লাট্টু। লাটিমের মতো ঘোরে বলে নাম লাট্টু। প্রচলিত ভাষায় লাট্টু লাইট। লাট্টুর আলো ঘুর্ণিতেই মাত কোচবিহার। এ দিকে টুনিতেও নীল-সাদা আলিপুরদুয়ারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নীল-সাদা টুনি নাকি বাজারে বাড়ন্ত। ডুয়ার্স থেকে ভুটান পাহাড় আলো নিয়ে বাজারে টুনি, বাহারি আলোর বাজার তুঙ্গে। চাহিদার সঙ্গে দামও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বলে ক্রেতাদের আক্ষেপও রয়েছে।
দীপাবলির সময় বাড়ির সামনেটা টুনির আলোয় সাজবে এটাই স্বাভাবিক৷ কিন্তু এ বছর আচমকাই এই টুনির চাহিদা এতোটা বেড়ে যাবে, তা যেন ভাবতে পারেননি আলিপুরদুয়ারের অনেক ব্যবসায়ীই৷ শহরের এক ব্যবসায়ীর কথায়, বাজারে সাদা টুনি অনেক রয়েছে৷ কিন্তু নীলটা ততটা নেই৷ ফলে বাধ্য হয়ে ক্রেতারা নানা রঙের টুনি কিনছেন৷
আলিপুরদুয়ারের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি দেবব্রত ঘোষ প্রতি বছর এই সময়টা অনেক বাড়ি টুনি দিয়ে সাজার কাজ করেন৷ অনেক বছর থেকেই এই কাজ করে আসছেন তিনি৷ দেবব্রবাবুর কথায়, ‘‘এ বার অনেকেই নীল-সাদা টুনি চাইছেন৷ কিন্তু বাজারে নীলটা পাচ্ছি না৷ তাই অন্য রঙ মিশিয়ে টুনি লাগাতে হচ্ছে৷’’ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ বারের দীপাবলিতে নতুন নতুন নানা ধরনের আলো এসেছে৷ প্রচুর পরিমাণে এসেছে এলইডি-র চেন৷ কিন্তু তারপরও চাহিদা বেশি টুনিতেই৷
কোচবিহারের এক ব্যবসায়ী রাকেশ সাজের বলেন, “টুনি লাইট রকমারি আলোর চেনও বাজারে রয়েছে। লাট্টু লাইট অনেকের নজর কাড়ছে।” অসম কাণ্ড ছায়া ফেলেছে কোচবিহারে। জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক বলেন, “অসমের গোলমালের জেরে সামগ্রিক ভাবে মন্দা রয়েছে। অসম থেকে পাইকারি ব্যবসায়ী দেওয়ালির সামগ্রী নিতে সে ভাবে আসেননি।” তবে স্থানীয় বাজারের চাহিদা সে অভাব অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের আর এক অংশের। দিনহাটায় ইলেকট্রিকের প্রদীপ বিক্রি হচ্ছে বেশি। সেই সাথে এলইডি টুনি লাইট বিক্রি হচ্ছে পাল্লা দিয়ে। মেখলিগঞ্জে এলইডি টুনি লাইট ও ডিসকো লাইটের চাহিদা বেশি বলে ব্যবসায়ী অভিজিৎ সাহা চৌধুরী জানান।