মন্ত্রী এলেন তবু গলল না বরফ

দিন কয়েক আগেই জেলা তৃণমূলের কমিটি নতুন করে সাজা হয়েছে। সেই কমিটিতে কিষাণ কল্যাণীর নাম নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৬:৩২
Share:

কিষাণ কল্যাণীর বাড়িতে গৌতম। নিজস্ব চিত্র।

কাটমানি নিয়ে এ বার মুখ খুললেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা কৃষ্ণকুমার (কিষাণ) কল্যাণী। রাজ্যে শাসক পরিবর্তনের সময়ে জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

Advertisement

রবিবার বাড়িতে বসে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “নেতারা কাটমানি নেওয়ার জন্যই লোকসভায় তৃণমূলকে হারতে হয়েছে।” এই মন্তব্য করার আগেই তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন পর্যটন মন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দেব। গত শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে কিষাণ কল্যাণীর বৈঠক হয়েছে। সেই খবর পেয়ে তাঁর কথা বলতে এসেছিলেন গৌতম। তবে ঘনিষ্ঠ মহল অনুযায়ী তাতেও বরফ গলেনি। তৃণমূলে আর থাকছে না বলেই স্পষ্ট মত একসময়ে রাজ্য তৃণমূলের কোর কমিটিতে থাকা কিষাণের। তাঁর কথায়, “সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার মানুষ নিয়ে নিয়েছে। আমার আর কিছু করার নেই।”

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখতে রবিবার সকালে বের হন পর্যটনমন্ত্রী। সে সময়ে জলপাইগুড়ি এসে সোজা কিষাণবাবুর বাড়িতে চলে যান তিনি। সূত্রের খবর, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই তিনি দলের এই পুরনো নেতার সঙ্গে কথা বলে অভিমান ভাঙাতে এসেছিলেন। সূত্রের খবর, কিষাণ কল্যাণী মন্ত্রীকে বলেন, “অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে হারের পরেই দলের নেতাদের একাংশের জীবনযাপন, আচার আচরণ নিয়ে বলেছিলাম। দলের উচিত ছিল তখন কথা বলা।” ঘণ্টাখানেকের বৈঠকের পরে কিষাণের বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ে গৌতম বলেন, “রাজনীতিতে আলোচনার দরজা সব সময়েই খোলা থাকে। কিষাণদা দলের পুরনো নেতা।” কিষাণবাবুর বিজেপিতে যাওয়া প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি গৌতম দেব।

Advertisement

দিন কয়েক আগেই জেলা তৃণমূলের কমিটি নতুন করে সাজা হয়েছে। সেই কমিটিতে কিষাণ কল্যাণীর নাম নেই। যদিও সে কারণে তাঁর ক্ষোভ নেই দাবি কিষাণের। তাঁর অভিযোগ, “ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলে বেনোজল ঢুকতে শুরু করেছে। তাঁরাই দলের মুখ হয়ে বসে আছে। কাটমানি খেয়ে, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এই সব নেতারাই দলটাকে ডুবিয়েছে।” তৃণমূলের একাধিক রাজ্য নেতা কিষাণবাবুর মোবাইলে এ দিন ফোন করেছিলেন বলে সূত্রের খবর। তাতেও রফাসূত্র বের হয়নি।

এ দিকে বিজেপির অন্দরের খবর, আগামী সপ্তাহে কিষাণবাবুর দলে যোগদান হতে পারে। রাজ্য নেতারা জলপাইগুড়িতে এসে দলবদল অনুষ্ঠান করাবেন। তাঁর সঙ্গে কয়েকজন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রতিনিধি, কাউন্সিলরও থাকতে পারেন বলে কিষাণ কল্যাণীর অনুগামীদের দাবি। আগামী বছর পুরসভা ভোট। কিষাণ কল্যাণীর অভিজ্ঞতা এবং যোগাযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। দলে যোগদানের পরে ডুয়ার্স এলাকা এবং জেলার সব ব্লকে কিষাণবাবুকে দিয়ে সভা করানো হবে বলে আপাতত ঠিক করেছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন