দম্পতিকে ডেকে মন্ত্রীর সুরাহা-বার্তা

গোপাল বিশ্বাস এবং সরস্বতী বিশ্বাস সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। ভোটের সময় তাঁরা দলের হয়ে বুথেও কাজ করেছেন। চম্পাসারির পোকাইজোতে তাঁদের ৪ কাঠা জমি রয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকা।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০৫:২০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

‘দিদিকে বলো’-তে টেলিফোন করে দলেরই শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ এনেছিলেন তৃণমূল কর্মী এক দম্পতি। সোমবার নিজের ব্যক্তিগত সহকারিকে দিয়ে তাঁদের ডেকে পাঠিয়ে কথা বললেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। দল সূত্রে খবর, মন্ত্রী ওই দম্পতির সামনেই শহরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেন এবং দম্পতিকে যাতে তাঁদের জমিতে ঢোকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, সেটা দেখতে বলেন। একই সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা বলে ওই অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। জানিয়েছেন, দল থেকে বহিষ্কারের মতো কড়া পদক্ষেপ নিতেও তিনি পিছপা হবেন না।

Advertisement

গোপাল বিশ্বাস এবং সরস্বতী বিশ্বাস সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। ভোটের সময় তাঁরা দলের হয়ে বুথেও কাজ করেছেন। চম্পাসারির পোকাইজোতে তাঁদের ৪ কাঠা জমি রয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকা। কিন্তু এলাকার শ্রমিক নেতা শ্যাম যাদব জমিটি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তিন বছর ধরে থানা, পুলিশ, মামলা করার পরে শ্যাম যাদব গ্রেফতারও হন। কিন্তু তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েই দম্পতিকে ফের উত্যক্ত করছেন বলে অভিযোগ। জমিটিতে থাকা ঘর তালাবন্ধ করে দেওয়া, দম্পতি এলাকায় গেলেই দলবল নিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শেষে, ৫ অগস্ট গোপাল ‘দিদিকে বলো’তে টেলিফোন করে সমস্যার কথা জানান। সেখান থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।

গৌতম দেব বলেন, ‘‘ওই দম্পতির জমির নথিপত্র ঠিকঠাক আছে। পুলিশ কমিশনারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ এর পরেই মন্ত্রী বলেন, ‘‘জমি দখল করে যে, তেমন নেতা আমাদের দরকার নেই। আমি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলছি। কেউ শুধরে গেলে ভাল। নইলে আর দেরি করা হবে না। দলের দরজা এদের জন্য বন্ধ।’’ দম্পতির কথায়, ‘‘মন্ত্রী যা করছেন তাতে আমরা খুশি। এই ধরনের লোকেদের জন্যই মানুষের কাছে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, ‘দিদিকে বলো’র পর সমস্ত কিছুই গৌতম দেবের নজরে আনা হয়। বিশ্বাস দম্পতির অভিযোগ শোনার পরে সরকারিভাবে ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে জমিটির রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়। তাতে ৪ কাঠা জমিটি যে বিশ্বাস পরিবারের, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। তার পরেই মন্ত্রী দম্পতিকে ডেকে পাঠান। ১৬ অগস্ট পুলিশ কমিশনার অথর্ব ত্রিপুরার কমিশনারেটে ডেকেছেন বিশ্বাস দম্পতিকে। স্বাধীনতা দিবসের পরে এলাকায় গিয়ে তাঁদের

নিজেদের জমিতে ঢোকার ব্যবস্থা করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

প্রধাননগর থানাকে। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত শ্রমিক নেতা বা তাঁর দলবল যাতে কোনও সমস্যা তৈরি না করেন, তা-ও দেখতে বলা হয়েছে পুলিশকে। অভিযুক্ত নেতা অবশ্য শ্যাম যাদবের দাবি, ‘‘আমি কারও ঘরে তালা দিইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন