আলোচনা: বাম মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষকে পরামর্শ দিচ্ছেন গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র
শহর সাজাতে বিরোধী পুরবোর্ডকে সাহায্য করতে তাঁর কোনও ছুৎমার্গ নেই, বৃহস্পতিবারের সকালে এমনই বার্তা দিতে চাইলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।
এ দিন সকালে তাঁর বাড়ির পাশের বাঘাযতীন পার্কের মাঠ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। মাঠে গর্ত খুঁড়ে প্যান্ডেল বাঁধা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই পুরসভায় ক্ষমতাসীন বামেদের সঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলছে। এ দিন সকালেই মন্ত্রী পৌঁছনোর আগে পার্কের মাঠে গর্ত খুঁড়ে পুরসভা ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান করেছেন বলে অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগ করে তর্ক জুড়ে দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন সরকার এবং বামবোর্ডের মেয়র পরিষদের সদস্য শঙ্কর ঘোষ। দুই নেতার তর্ক শুনে পার্কের আশেপাশে ভিড়ও করেন কৌতুহলীরা। এরই মধ্যে মন্ত্রী গৌতমবাবু এসে পৌঁছন। ডেকে নেন মেয়র পরিষদ সদস্য শঙ্করবাবুকে। তাঁকে নানা পরামর্শ দেন। জানিয়ে দেন পার্ক সৌন্দর্যায়ন নিয়ে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে।
পুরসভার বিরুদ্ধে মাঠে গর্ত করে অনুষ্ঠান নিয়ে বিরোধী তৃণমূল কাউন্সিলরদের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যম জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘সে বিষয়ে তৃণমূল পরিষদীয় দল বলতে পারবে। তবে এরপর থেকে পুরসভা জানালে আমি আগে থেকে হ্যাঙ্গারের ব্যবস্থা করে দেব। মাঠ নষ্ট হবে না। এই মাঠ আমাদের সকলের। সকলকেই রক্ষা করতে হবে।’’
পুরসভার ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের মঞ্চ বাঁধা হয়েছে বাঘা যতীন পার্কের মাঠে গর্ত খুঁড়ে, এটাই অভিযোগ ছিল বিরোধী তৃণমূলের। অভিযোগ সত্যি নয় বোঝাতে এ দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মঞ্চ খোলার কাজ শুরু করে পুরসভা। ছিলেন মেয়র পরিষদের সদস্য শঙ্করবাবু। খুঁটি, বাঁশ খোলার পর তিনি দাবি করেন কোথাও শাবল দিয়ে গর্ত খোঁড়া হয়নি, সব খুঁটি চাপ দিয়ে বসানো হয়েছি। মঞ্চের পেছন দিকে বেশ কয়েকটি গর্ত দেখিয়ে সেগুলো শাবল দিয়ে খোঁড়া বলে পাল্টা দাবি করেন বিরোধী কাউন্সিলররা। মন্ত্রী গৌতমবাবু পৌঁছলে শঙ্করবাবু খুঁটি তুলে তাঁকেও বোঝাতে শুরু করেন মাঠ খোঁড়া হয়নি। গৌতমবাবু সে সব আমল না দিয়ে শঙ্করবাবুকে ডেকে পার্কের আলো, শব্দ সংযোজন এ সব নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। বাঘাযতীন পার্কে ঢোকার মুখে ‘শিলিগুড়ি পুর নিগমে’র একটি বোর্ড টাঙানো রয়েছে। সেই বোর্ডকে সৃদৃশ্য ভাবে তৈরি করে দেবেন বলেও মন্ত্রী জানান। শঙ্করবাবুকে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমার মেয়রের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’’
পুরসভায় প্রশাসক থাকাকালীন গৌতমবাবুর তত্ত্বাবধানেই মাঠ সংস্কার হয়েছিল। সাউন্ডবক্স বসেছিল। সেই বক্সে যেন নিয়মিত গান বাজে তার অনুরোধ করে মেয়র পরিষদকে বলেন, ‘‘শঙ্কর এটা দেখো।’’ পরে শঙ্করবাবুও বলেন, ‘‘শহরের উন্নয়ন নিয়ে এমনটাই তো বাঞ্ছনীয়। আশা করি মন্ত্রীর সঙ্গে পরবর্তীতেও সহয়োগিতা পাব।’’
মেয়র অশোকবাবু এ দিন বাঘাযতীন পার্কে যাননি। সব শুনে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মাঠ যে পুরসভা খোঁড়েনি তার প্রমাণ হয়েছে। মন্ত্রী কি বলেছেন শুনেছি। ভালই তো!’’